সকালেরসময় রিপোর্ট:: বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। তাই তিন দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ জিতে নিয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। তাইজুল ইসলামের অসাধারণ বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ানদের হারিয়েছে তারা ৬৪ রানে। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ মাত্র ১২৫ রানে অলআউট হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ঠিক হয় ২০৪ রানের। এই লক্ষ্যটাই তাদের জন্য পাহাড়সমান করে তোলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা, বিশেষ করে তাইজুল। তার ৬ উইকেট প্রাপ্তির দিনে ক্যারিবিয়ানরা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১৩৯ রানে। যাতে ৬৪ রানের জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের চা বিরতির আগে শেষ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম টেস্ট। এই সময়ে ‘স্পিন-রাজত্বে’ দুই দল মিলিয়ে উইকেট হারিয়েছে ১৬টি! যেখানে মাত্র ৩৩ রান খরচায় তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ প্রত্যেকেরই শিকার দুটি করে উইকেট।
তৃতীয় দিনের চা বিরতির আগে শেষ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম টেস্ট। এই সময়ে ‘স্পিন-রাজত্বে’ দুই দল মিলিয়ে উইকেট হারিয়েছে ১৬টি! যেখানে মাত্র ৩৩ রান খরচায় তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ প্রত্যেকেরই শিকার দুটি করে উইকেট। হারের আগে বাংলাদেশকে কিছুটা অস্বস্তিতেও রেখেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭৫ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর নবম উইকেটে জোমেল ওয়ারিকানের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়েন সুনিল অ্যামব্রিস। শেষ পর্যন্ত তাদের জুটি ভাঙেন মিরাজ। ৪১ রান করা ওয়ারিকানকে ক্যাচ বানান সাকিবের হাতে। আর তাইজুল বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন ৪৩ রান করা অ্যামব্রিসকে আউট করে।
ম্যাচসেরা মুমিনুল
নাঈম হাসান প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তাকেও ছাড়িয়ে গেলেন তাইজুল ৬ উইকেট নিয়ে। তবু চট্টগ্রাম টেস্টের সেরা খেলোয়াড় তাদের কেউই নন। ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন পরীক্ষার এই টেস্টে চমৎকার সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। প্রথম ইনিংসে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ১২০ রানই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য।
তাইজুলের ৫ উইকেটে জয় দেখছে বাংলাদেশ
চলছে তাইজুল জাদু। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের বিষাক্ত স্পিনে নীল করে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তার চমৎকার বোলিংয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে বাংলাদেশের চাই আর ২ উইকেট। ২০৪ রানের লক্ষ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৮ রান তুলতে হারিয়েছে ৮ উইকেট। প্রথম ইনিংসে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তাইজুল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে জ্বলে উঠলেন আরেকবার। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের উইকেট উৎসবে মধ্যমণি তিনি। অসাধারণ বোলিংয়ে এই স্পিনার পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম ৫ উইকেটের দেখা। কেমার রোচকে (১) এলবিডাব্লিউ করে ৫ উইকেট পূরণ করেন তাইজুল। ফিল্ড আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ।
তাইজুলের ঘূর্ণিতে ক্যারিবিয়ানরা দিশেহারা
লাঞ্চের আগে দুইবার উইকেট উদযাপন করা তাইজুল আবারও করলেন উৎসব। এবার শেন ডওরিচ ও দেবেন্দ্র বিশুকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়েছেন তিনি।জিম্বাবুয়ে সিরিজের সাফল্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ধরে রাখলেন তাইজুল। চমৎকার বোলিংয়ে ডওরিচের পর আউট করেছেন বিশুকে। ক্যারিবিয়ান উইকেটরক্ষক ডওরিচকে (৫) ফেলেন এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে। আর বিশুকে সরাসরি বোল্ড করে মাত্র ১০ রান খরচায় তাইজুল নামের পাশে যোগ করেন ৪ উইকেট।
বিপজ্জনক হেটমায়ারকে থামালেন মিরাজ
লাঞ্চের পর আবারও উইকেট উৎসবে মাতলো বাংলাদেশ। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা শিমরন হেটমায়ারকে থামালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ইনিংসে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছিলেন হেটমায়ার। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবিয়ানরা দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে, তখনও তিনি ব্যাটে ঝড় তুললেন। টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলে বাংলাদেশের বোলারদের ভড়কে দেওয়ার পরিকল্পনাই হয়তো ছিল তার। যদিও তার ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি মিরাজ। এই স্পিনারের বলে ‘বিগ’ শট খেলতে গিয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান মিড উইকেটে ধরা পড়েন নাঈম হাসানের হাতে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৭ রান।
লাঞ্চের আগে এলোমেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ
বাংলাদেশের ঘূর্ণি বলে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের সামনে এলোমেলো ক্যারিবিয়ানরা। তৃতীয় দিনের লাঞ্চের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১ রান তুলতেই হারায় ৪ উইকেট। সাকিব নেন ২ উইকেট, তাইজুলের পান সমান উইকেট।
সাকিবের পর তাইজুলের জোড়া আঘাত
আবারও সাকিবর আঘাত। তার উইকেট উৎসবের সঙ্গে তাইজুল ইসলাম যোগ দিলে এলোমেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার। দলীয় ১১ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা একই স্কোরে হারায় আরও ২ উইকেট। শাই হোপ আউট হন দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে। সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাত্র ৩ রান করে উইকেটরক্ষক মুশফিকের গ্ল্যাভসে ধরা পড়েন তিনি। অধিনায়কের গড়ে দেওয়া মঞ্চে তাইজুল হয়ে ওঠেন আরও ভয়ঙ্কর। তৃতীয় দিনের লাঞ্চের আগে করেছেন মাত্র ৫ বল, কোনও রান না দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট। ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে (৮) ফিরিয়ে শুরু করেন উইকেট উদযাপন। ৩ বল বিরতি দিয়ে এই স্পিনার তুলে নেন রোস্টন চেসের (০) উইকেট।
শুরুতেই পাওয়েলকে ফেরালেন সাকিব
বড় লক্ষ্য দেওয়া যায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তাই বোলিংয়ে দারুণ শুরুর অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। শুরুতেই বল হাতে নেওয়া সাকিব আল হাসান এনে দিলেন সেটা। তার বলে আউট হয়েছেন কিয়েরন পাওয়েল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাকিব তুলে নেন উইকেট। আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং শুরু করার ইচ্ছা থেকেই হয়তো মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই উইকেট ছেড়ে মারতে এসেছিলেন পাওয়েল। কিন্তু ব্যাটে বল না লাগলে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমের স্টাম্প ভেঙে দিতে কোনও অসুবিধাই হয়নি। ফিরে যাওয়ার আগে ক্যারিবিয়ান ওপেনার খুলতে পারেননি রানের খাতা।
২০৪ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনে দেড় ঘণ্টায় শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। তাতে চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে ৩২৪ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই ছিল চাপে। দ্বিতীয় দিনের ৫ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে অলআউট হয়েছে ১২৫ রানে। ব্যাটিং ব্যর্থতার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩১ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। তৃতীয় দিনের সকালে বল হাতে চমৎকার পারফর্ম করা দেবেন্দ্র বিশু ২৬ রান খরচায় পেয়েছেন ৪ উইকেট। ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার রোস্টন চেসের।