সিরিয়ার বিমান হামলায় নিহত ২৫০


২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ৩:৩৪ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় বিশ্ব ডেস্ক::  সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় ঘুউতা শহর ও গোটা ছিটমহলজুড়ে সরকারি বাহিনীর অবিরাম বিমান হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় আড়াইশর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।আহত কয়েকশ। শুধু মঙ্গলবারেই নিহত হয়েছে শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু। সেখানে যুদ্ধবিমান থেকে বৃষ্টির মতো অবিরাম বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে ,সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ গ্রুপের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ২০১৩ সালে রাসায়নিক অস্ত্রের হামলার পর টানা দুদিনে একসঙ্গে এতো বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এটাই প্রথম।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, মঙ্গলবার অবিরাম বিমান হামলায় ও কামানের গোলার আঘাতে এলাকাটিতে ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত দুদিনে ৬টি হাসপাতালের ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে।এতে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু এবং অন্তত ৩টি হাসপাতাল আংশিক ধ্বংস হয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সিরিয়া সংকটে জাতিসংঘের আঞ্চলিক মানবিক কার্যক্রমের সমন্বয়ক পানোস মোমৎজিস বলেন, “গত ৪৮ ঘণ্টায় পূর্ব ঘুউতায় ৬টি হাসপাতালের ওপর ভয়াবহ হামলার খবরে আমি চরম মর্মাহত।

সিরিয়ান-আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটির দাবি, জাতিসংঘের তালিকার বাইরেও অন্য একটি প্রধান হাসপাতালেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে। পূর্ব ঘুউতার বাসিন্দা দু’সন্তানের মা শামস আল জাজিরাকে জানান, শহরটির ওপর গত ৪৮ ঘণ্টায়িএক মুহূর্তের জন্যও বিকট শব্দে জঙ্গিবিমানের উড়ে যাওয়ায় কোনো বিরাম ঘটেনি। কামানের গোলাবর্ষণ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রেখে তারা আমাদের ওপর মুহূর্মুহু বিমান থেকে মিসাইল ছুড়ে গেছে। অবিরাম কামানের গোলা নিক্ষেপ ও বিমান হামলার মধ্যে শহরের মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে।

খালিদ আবুলাবেদ নামের রাজধানী দামেস্কের একটি সংস্থার একজন মাঠকর্মীর ভাষায়, ‘‘বর্তমানে ওই এলাকায় যা চলছে তা ভয়াবহ বিপর্যয়কর। এক কথায় অবিশ্বাস্য। যা আলেপ্পোর ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয় দিনরাত হামলার পর হামলা। বোমা আর মিসাইল। কামানের গোলা ও মিসাইল হামলা থেকে হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা, স্কুল, বাজার কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না। এর ফলে হতাহতের কাফেলা কেবলই দীর্ঘ হচ্ছে। চার লাখ লোকের এই শহরটির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গোটা শহরটিতে এখন প্রাণের কোনো সাড়া নেই। যেন এক মৃত্যুপুরিতে আছে সবাই। এখানে খাদ্য, ওষুধ, পানি সহ দৈনন্দিন প্রয়োজনের কোনোকিছুই নেই। অবিরাম হামলার কারণে বাইরে পানেই। দেবারও কোনো সুযোগ নেই। ঘরে বাইরে দু’দিকেই মরণ। পূর্ব ঘুউতা এলাকাটি সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ২০১৩ সাল থেকেই অবরুদ্ধ করে রেখেছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে এটাই বিদ্রোহীদের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সর্বশেষ ঘাঁটি বলে বিবেচিত।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page