আমাদের বিশ্ব:: সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীরা। জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতি চুক্তির বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করার অভিযোগে দেশ দু’টির বিরুদ্ধে তারা এই হুমকি দিয়েছে। কিন্তু সৌদি আরব বলছে, হাউছিরাই চুক্তির শর্ত মানছে না।
রিয়াদ ও আবুধাবিতে হামলা চালানোর মতো ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ গড়ে তোলার দাবি করেছে হাউছি সেনা কর্মকর্তা কর্নেল ইয়াহিয়া সারিয়া। সৌদি আরব বলছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্টকহোমে স্বাক্ষরিত অস্ত্রবিরতি চুক্তিটির শর্ত মেনে চলছে না হাউছি বিদ্রোহীরা। তাদের হুদাইদা ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা। অন্য দিকে হাউছিরা বলছে, তারা জাতিসঙ্ঘের কাছ থেকে আরো বেশি মাত্রার নিশ্চয়তা চায় এই মর্মে যে, তারা যদি হুদাইদা ছেড়ে দেয় তাহলে সৌদি আরব তার অনৈতিক সুযোগ নেবে না।
হুদাইদাতে জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় যে অস্ত্র বিরতি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে হাউছিদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের কাছে এমন ‘ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ আছে’ যা দিয়ে তারা সৌদি আরব ও আরব আমিরাতে আঘাত হানতে সক্ষম। হাউছি কর্নেল ইয়াহিয়া সারিয়ার ভাষ্য, ‘আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে, শত্রুপক্ষ হুদাইদাতে সংঘর্ষ বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা তাদের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখছি। আমাদের বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতিতে উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত।
কর্নেল সেরিয়া বলেছেন, এই যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অস্ত্র। সৌদি আরবে হামলা চালাতে হলে এগুলোর মাধ্যমেই তা করতে হবে।
২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী সানা দখলে নেয় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হাউছি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে পালিয়ে যান হাদি। ২০১৫ সালের মার্চে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব।
লোহিত সাগরে অবস্থিত হুদাইদা বন্দরটি ইয়েমেনের সাথে যোগাযোগের প্রধান পথ। বন্দরটি আক্রান্ত হলে লাখ লাখ ইয়েমেনির জন্য খাবার, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ এই বন্দরটি দিয়েই মানবিক সঙ্কটে থাকা ইয়েমেনের ৮০ শতাংশ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়। জাতিসঙ্ঘের মতে, ইয়েমেন এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানবিক সঙ্কট চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশটির প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় আছে।
সূত্র : রয়টার্স