মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)


২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১২:২৩ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় বিশ্ব ডেস্ক::  রোহিঙ্গা হত্যার দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। রাখাইন-কাচিনসহ কয়েকটি প্রদেশে হত্যাযজ্ঞ চালানো মিয়ানমার সেনাদের ওপর আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সম্ভাব্য শীর্ষ কর্মকর্তা বা জেনারেলদের তালিকা তৈরি করতে আগামী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধানের কাছে আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানানো হবে। ওই তালিকা ধরে মিয়ানমার সেনাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে ইইউ’র পক্ষ থেকে সবচেয়ে কড়া পদক্ষেপ।

দুই কূটনীতিকের বরাদ দিয়ে এ বিষয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো ইইউও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং এতদঞ্চলে তাদের সম্পত্তি জব্দ ও লেনদেনে কড়াকড়ি আরোপ করতে চলেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর এ জোটের একজন কূটনীতিক বলেন, পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ইইউ’র মন্ত্রীরা জোটের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মগেরিনির প্রতি আহ্বান জানাবেন।

আগামী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নিয়মিত বৈঠকে বসছেন ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এই বৈঠকেই সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হবে মগেরিনি ও ইইউ’র পররাষ্ট্র বিষয়ক সেল ‘ইয়াস’র কাছে। ১৯৯০ এর দশকে সামরিক জান্তার দেশটির ওপর যে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেটাও পুনরায় আরোপ করার দাবি উঠবে বৈঠকে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর বা সরকারপ্রধান অং সান সু চি’র মুখপাত্র জ তাইকে যোগাযোগ করে পাওয়া না গেলেও রোহিঙ্গা নিধনে নেতৃত্বদাতা সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নি কোনো মন্তব্য করেননি।

ওই কূটনীতিকরা বলছেন, নিয়মিত বৈঠক শেষে ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিতে পারেন। যেখানে তাদের সবশেষ অবস্থান স্পষ্ট হতে পারে। ইইউ কোনো জেনারেলকে টার্গেট না করলেও গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিষেধাজ্ঞায় মেজর জেনারেল মং মং সোয়েকে ‘টার্গেট’ করে। এই সোয়েই রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ চালানো সেনা কমান্ডের প্রধান কর্তা। যেহেতু ইইউর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয়াদি সবসময়ই ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালিত হয়, ধারণা করা হচ্ছে জোটের মিয়ানমার বিষয়ক সিদ্ধান্তও একইভাবে বাস্তবায়ন হবে।

গত বছরের আগস্টে সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যে অভিযান শুরু করে, সেটাকে ‘জাতিগত
নির্মূলীকরণ’ বলছে যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘ। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে, ওই নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে সম্প্রতি সে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ঢাকার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে নেপিদো। যদিও প্রক্রিয়ার ধীরগতিতে মিয়ানমারের নেতৃত্বের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ