সকালেরসময় রিপোর্ট:: ভারতের তিহার জেল সুপারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এক অভিযোগ করেছেন এক মুসলমান বন্দি। মারাত্মক নিপীড়ন, খাবার না দেয়ার পাশাপাশি তার শরীরের লিখে দেয়া হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় চিহ্ন ‘ওঁ’। ভারতের আজকাল পত্রিকায় আজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিল্লির এক আদালতে হাজির করা হলে নাবির নামের ওই মুসলমান বন্দি এ অভিযোগ করেন। বিচারকের সামনে তিনি জামা খুলে দেখান, প্রায় ছয় ইঞ্চি জায়গা জুড়ে এঁকে দেয়া হয়েছে ‘ওঁ’।
জানা গেছে, শুক্রবার অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য তাকে পেশ করা হয়েছিল দিল্লির কড়কড়ডুমা আদালতে৷ সেখানেই এ অভিযোগ করেন নাবির। সকলের সামনেই এরপর নিজের জামা খুলে বিচারপতিকে দেখায় তার পিঠের চিহ্নটি। দেখা যায় ওই বন্দির বাঁ-কাঁধের একটু নিচে প্রায় ছ’ইঞ্চি বড় ওই ‘ওঁ’ চিহ্নটি খোদাই করা হয়েছে।
জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের ব্যাখ্যা, যদি জোর করে ওই চিহ্নটি খোদাই করা হত, তাহলে এত নিখুঁতভাবে সেটি আঁকা যেত না।দিল্লির ওই আদালতের বিচারপতি অবশ্য জেল কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্যকে বিশ্বাস না করে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কারা বিভাগের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব প্রিজনের ওপর এর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি বলেন, ঘটনার প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া, অন্যান্য বন্দিদের জবানবন্দিও নেয়া হবে। জেলের বন্দিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টি যাতে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়, সেই ব্যাপারেও নির্দেশ দেয়া হল কারা কর্তৃপক্ষকে’। আদালত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। এরপরও রায় দেয়া হবে।
তবে যতদিন না তদন্তের রিপোর্ট আসছে, ততদিন ওই বন্দিকে অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিল আদালত। এতদিন অবৈধ অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে দোষী নাবিরকে রাখা হয়েছে তিহারের জেলের চার নম্বর সেলে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পরে মুখে তালা দিয়েছেন তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে একজন বন্দির গায়ে এই ধরনের চিহ্ন আঁকা হল, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না তিহার প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কোনো কর্মকর্তাই। এক জনের কথায়, আদালতের নির্দেশ মতো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে৷ এ বিষয়ে যা বলার তা আদালতকেই লিখিতভাবে জানানো হবে।