সকালেরসময় আন্তর্জাতিক :: সফরের প্রথম দিনেই মিয়ানমারের ক্ষমতাধর সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
সোমবার মিয়ানমারে সফরে এসে পোপ প্রথমেই সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংয়ের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। ইয়াঙ্গুনে আর্চবিশপের বাসভবনে বৈঠকটি ১৫ মিনিট স্থায়ী হয় বলে জানায় এএফপি।
বৈঠক শেষে ভ্যাটিকানের মুখপাত্র গ্রেগ বার্ক বলেন, সেনাপ্রধান এ সংকটময় মুহূর্তে দেশটির কর্তৃপক্ষের ‘মহান দায়িত্বের’ কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠকে পোপকে মিন অং হ্লাং বলেন, ‘মিয়ানমারে কোন ধর্মীয় বৈষম্য নেই। এমনকি আমাদের দেশের সামরিক বাহিনী শান্তি ও স্থীতিশীলতার জন্য কাজ করছে।’
সফরসূচি অনুযায়ী মিয়ানমারের জেনারেল মিং-এর সঙ্গে পোপের নির্ধারিত বৈঠকটি শেষ দিন ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে শুরুর দিনেই ইয়াঙ্গুনে আর্চ বিশপের বাসভবনে পোপের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। বিশেষ অভিযান ব্যুরোর তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও ছিলেন সেই বৈঠকে। শীর্ষস্থানীয় এই সামরিক কর্মকর্তাদেরই রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন এবং ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে দেশছাড়া করার মূল হোতা বলে মনে করা হয়।
তবে ভ্যাটিকানের মুখপাত্র এ নিয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত কিছু জানাননি। অনুষ্ঠিত বৈঠককে অনানুষ্ঠানিক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, চলমান গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারে বিভিন্ন কতৃপক্ষের দায়িত্ব-কর্তব্যের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
এদিকে সিনিয়র জেনারেল সিনিয়র জেনারেলের দাফতরিক ফেসবুক পাতায় দেওয়া এক পোস্ট অনুযায়ী, পোপকে স্বাগত জানিয়ে দাবি করা হয়েছে, মিয়ানমারে কোনও সাম্প্রদায়িক বিভেদ নেই। সেখানকার কর্তৃপক্ষ সব সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। সেনাবাহিনীও কারও প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে না।
পোপ প্রথমবারের মতো সোমবার দুপুরে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে পৌঁছান রোহিঙ্গা প্রশ্ন সঙ্গে নিয়ে। ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার সদস্য তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও সংগীতের মাধ্যমে পোপকে শুভেচ্ছা জানায়। এদিকে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা তাকে রোহিঙ্গা প্রশ্নে কোনও কথা না বলার হুমকি দিয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিস তিনদিনের সফর শেষে ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উদ্দেশে নেপিদো ছাড়বেন।