কাবুলের মসনদে তালেবান, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গানি


সকালের-সময় বিশ্ব ডেস্ক  ১৫ আগস্ট, ২০২১ ১১:১৪ : অপরাহ্ণ

অবশেষে আবারো কাবুলের মসনদে ফিরলো তালেবান। আফগানিস্তানে ক্ষমতাবদলের ধারায় দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন তালেবান নেতা মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। কাবুলের প্রেসিডেন্ট ভবনে মাত্র ৪৫ মিনিটের বৈঠকেই সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যায়। বৈঠক শেষ হতেই তালেবানের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেন আশরাফ ঘানি।

ক্ষমতা ছাড়ার পর তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে কাবুল ছেড়ে যান তিনি। এছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এসব খবর নিশ্চিত করেছেন।

আশরাফ গানি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরপরই তালেবান নেতারা তাদের যোদ্ধাদের শহরে প্রবেশ করতে বলেন এবং লটুতরাজ ঠেকাতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাবুলের বেশিরভাগ নিরাপত্তা চৌকি থেকে আফগান সেনারা সরে যাবার কারণে শহরে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ জানান, রাজধানীর মানুষকে ভয় না পেতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জানমালের নিরাপত্তা দিতে যোদ্ধাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, কাবুলের বিভিন্ন এলাকায় থেমে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়। এছাড়া বিদেশি গণমাধ্যমও এ ধরনের খবর দিচ্ছে।

একদিন আগে যখন আফগানিস্তানে সরকারের দখলে থাকা শহর মাজার-ই শরীফ নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান, তখনই পরিস্কার হয়ে যায় কি হতে চলেছে। রোববার সকাল হতেই দলে দলে তালেবান যোদ্ধারা রাজধানী কাবুলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। কোন রকম বাধা ছাড়াই তারা শহরের চারপাশে অবস্থান নেয়।

এক পর্যায়ে তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে, নেতাদের কাছে থেকে নির্দেশ আসে সংযত হবার। বলা হয় সংঘাত নয় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতাবদল চায় তারা।

রোববার সকালে জালালাবাদের পতন হবার পর কাবুলের পতন ছিলো সময়ের ব্যাপার। যেন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতই ছিলো ক্ষমতাসীন আশরাফ গানি সরকার। এরমধ্যেই খবর আসে আলোচনার মাধ্যমে কাবুলে ক্ষমতা পেতে চায় তালেবান। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ।

এর পরেই মার্কিন কূটনীতিক ও আফগান প্রেসিডেন্ট ঘানির সঙ্গে কথা বলতে চান তালেবানের শীর্ষ নেতারা। তড়িঘড়ি করে মার্কিন ও ন্যাটো কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আশরাফ গানি। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার।

কাবুলের প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় তালেবান নেতাদের। মোল্লা আবদুল গনি বরাদরের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্টের ভবনে উপস্থিত হয় তালেবানের একটি প্রতিনিধি দল। তাদের সঙ্গে বৈঠকটি ছিলো মূলত আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

অত্যন্ত দ্রুততম সময়ে তালেবানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আশরাফ ঘানি। নতুন তালেবান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন গোষ্ঠীটির প্রধান আবদুল গনি বরাদর। এপ্রিলের শুরুতে আমেরিকা ঘোষণা দেয়, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের। ৩১ আগস্টের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শেষ করার কথা ছিলো।

কিন্তু ২ জুলাই সবশেষ দলটিকে তুলে নেয় বাইডেন প্রশাসন। তারপর থেকেই মাথাচাড়া দেয় তালেবান গোষ্ঠি। একের পর এক নগর, জনপদ দখল করতে শুরু করে। ৩১ আগস্টের আগেই দখল করে নেয় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলও।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ