ইসরায়েলি বোমায় গাজায় প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে ৪০০ শিশু—ইউনিসেফ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ৬:১১ : অপরাহ্ণ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে টানা ১৮ দিন ধরে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি শিশু। জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশু হতাহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, এটা আমাদের বিবেকের ওপর কলঙ্ক।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ১৮ দিন ধরে চলমান লড়াইয়ে ২ হাজার ৩৬০ শিশু নিহত হয়েছে বলে ইউনিসেফ জানিয়েছে। এছাড়া সংঘাতে আহত হয়েছে আরও ৫ হাজার ৩৬৪ শিশু। গাজার প্রায় ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকই ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু।

ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাডেল খোদর বলেন, গাজায় প্রতিদিন প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে। গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি আমাদের সম্মিলিত বিবেকের ওপর একটি ক্রমবর্ধমান কলঙ্ক। শিশুদের মৃত্যু ও আহত হওয়ার হার বিস্ময়কর।

তিনি বলেন, এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, উত্তেজনা প্রশমিত না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য, পানি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জ্বালানিসহ মানবিক সহায়তা না দিলে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার প্রায় প্রতিটি শিশুই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, নিরবচ্ছিন্ন হামলা, বাস্তুচ্যুতি এবং খাদ্য, পানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মারাত্মক ঘাটতির কারণে গভীর বেদনাদায়ক ঘটনা ও আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, পশ্চিম তীরে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ২৮ জন শিশু নিহত এবং অন্তত ১৬০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, হত্যা ও পঙ্গু করা, অপহরণ, হাসপাতাল ও স্কুলে হামলা এবং মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা শিশুদের অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। ইউনিসেফ জরুরি ভিত্তিতে সব পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে, মানবিক প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিতে এবং সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা ৫৬ বছর ধরে দমবন্ধ দখলদারিত্বের শিকার। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ হামাসের আক্রমণকে ন্যায্যতা দেয় না। তেমনি হামাসের হামলার বিপরীতে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হামলা চালানোও ন্যায়সঙ্গত নয়।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ভোরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের ওপর আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ইসরায়েলে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

এরপর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গাজার বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং, যা উপত্যকার ‘লাইফ লাইন’ নামে পরিচিত।

সূত্র—ইউনিসেফ, আল জাজিরা

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ