আর ফেরা হলো না ড.আবদুস সামাদের


১৬ মার্চ, ২০১৯ ৭:৩৮ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজের আজান দিয়েছিলেন ড. মো. আবদুস সামাদ। এমনকি এদিন জুমার খুতবার বয়ান দেয়ার কথাও ছিল তার। তবে তার আগেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন। নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বন্দুকধারীর গুলিতে যারা নিহত হয়েছেন তিনিও তাদের একজন।

ড. আবদুস সামাদের নিউজিল্যান্ডপ্রবাসী স্ত্রী কিশোয়ারা সুলতানার বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন নিহতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন।
ড. মো. আবদুস সামাদের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মধুরহাইল্ল্যা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে ড. সামাদ সবার বড়।

ড. মো. আব্দুস সামাদের ছেলে তোহা মোহাম্মদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডয়চে ভেলে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে ঘটনার কিছুক্ষণ পর যখন তার ছেলে মোহাম্মদ তোহা’র সঙ্গে কথা হয় তখনও তিনি নিশ্চিত নন বাবার মৃত্যুর বিষয়ে৷ ড. সামাদের তিন ছেলের শুধুমাত্র বড় ছেলে তোহা মোহাম্মদ দেশে থাকেন৷ চাকরি করেন ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে৷ আর বাকি দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছিলেন সামাদ৷

ড. সামাদের বড় ছেলে তোহা ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, বাবা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সেটা আমরা নিশ্চিত৷ খবর শুনে মা আর ছোট ভাই হাসপাতালে গিয়েছিল৷ কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে নিশ্চিত করেনি যে বাবা মারা গেছেন৷ তারা বলছেন, যারা গুলিবিদ্ধ হয়ে এসেছেন তাদের সবার চিকিৎসা চলছে৷ এখন যেহেতু সেখানে রাত, সকালে নিশ্চিত হওয়া যাবে আসলে বাবার অবস্থা কী? বাবা-মা ও দুই ভাই সবাই নিউজিল্যান্ডের নাগরিক৷ বাবা ওই মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করতেন৷ আর আরবের একজন ইমাম ছিলেন, তিনি না থাকলে বাবা ইমামতিও করতেন৷

ড. সামাদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন৷ গত ৮-১০ বছর ধরে স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়ে সেখানেই বসবাস করছিলেন তিনি৷ তবে মাঝে মাঝে তিনি দেশে আসতেন৷ এদিকে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. সুলতান উদ্দিন ভূঞা সাংবাদিকদের বলেছেন, ড. সামাদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন৷

তিনি গত বছর চাকরি থেকে ইস্তফা দেন৷ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে লেখাপড়া শেষ করে ১৯৮০ সালে ড. সামাদ কৃষিতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন৷ এর আগে তিনি এক বছর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে চাকরি করেছেন৷ চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৮ সালে তিনি নিউজিল্যান্ডের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন৷ ওই সময় নিউজিল্যান্ডেই তার দুই ছেলের জন্ম হয়৷

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page