আমি একজন গর্বিত মুসলিম: নাইলা হাসান


১৭ মার্চ, ২০১৯ ২:০৯ : অপরাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: নিউজিল্যান্ড পুলিশের সিনিয়র অফিসার নাইলা হাসান হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অকল্যান্ডে সমবেত হাজারো মানুষের সামনে বক্তব্য দিয়ে গিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। সালামের পর কোরআনের আয়াত পড়ে বক্তব্য শুরু করেন এই নারী মুসলিম পুলিশ।

তিনি বলেন আমি একজন গর্বিত মুসলিম। মসজিদে নিহত আমার মুসলিম ভাইবোনদের জন্য আমি এবং আমার সহকর্মীরা স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ। আমার এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আমার মুসলিম ভাইবোনদের কি নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আমি আমার মুসলিম কমিউনিটির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ক্রাইশ্চার্চ ও পুরো নিউজিল্যান্ডের মানুষ আপনাদের পাশে আছে। আমি এবং আমার সহকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আক্রান্ত পরিবারের পাশে থাকা।

কোথাও কোন সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সাথে সাথে ইমার্জেন্সি ১১১ নাম্বারে কল করবেন। এর আগে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডের্ন এখন এই হামলার শিকার হওয়া মানুষগুলোর জন্য কিছু বলতে চাই। এই কথাগুলো শুধু আমার একার নয়, পুরো নিউজিল্যান্ডের। ক্রাইস্টচার্চকে এই মানুষগুলো তাদের ঘর বানিয়েছিলেন। তারা হয়তো এখানে জন্ম নেননি কিন্তু এই শহরকে তারা ঘর বলতেন, এই শহরে তারা তাদের সবকিছু সমর্পণ করেছেন।

এ শহরকে তারা তাদের পরিবার অংশ করেছেন। তারা এই শহরকে ভালোবেসেছেন এবং শহরটিও তাদের। এখানে তারা এসেছিলেন নিরাপত্তার জন্য। নিরাপত্তার সঙ্গে তারা তাদের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়েছেন, নিজ ধর্মের চর্চা করেছেন। যারা এখন ঘরে বসে ভাবছেন কেন এই হামলা হলো, বলছি; আমরা, নিউজিল্যান্ড, এই হামলার শিকার হয়েছি এই জন্য নয় যে আমরা তাদের আশ্রয় দেই যারা ঘৃণা করে। বর্ণবাদকে প্রশ্রয় দেই বলে বা জাঙ্গবাদকে সমর্থন করি বলে আমাদের ওপর এই সন্ত্রাসী আঘাত আসেনি।

আমাদের বেছে নেয়া হয়েছে কারণ আমরা ওগুলোর কোনোটাই করি না। হামলার জন্য আমাদের বেছে নেয়া হয়েছে আমাদের বৈচিত্র্যতা, উদারতা, সহমর্মিতার জন্য। নিউজিল্যান্ড তাদেরই ঘর যারা আমাদের মতোই এই মূল্যবোধের চর্চা করে। জোর দিয়ে সবাইকে নিশ্চিত করতে চাই এই জঘন্য হামলা কোনো ভাবেই আমাদের এই মূল্যবোধের বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করতে পারবে না।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page