আজ বিশ্ব পোলিও দিবস


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৪ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৫১ : অপরাহ্ণ

আজ বিশ্ব পোলিও দিবস। পোলিও একটি ভাইরাস-ঘটিত সংক্রামক রোগ। সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা এ রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। একবার এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে আরোগ্য লাভের সুযোগ নেই বললেই চলে। আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো লক্ষণের মধ্যে গুরুতর লক্ষণ হলো জ্বর, শ্বাসকষ্ট শেষে পক্ষাঘাত বা পঙ্গুত্ব। বিপজ্জনক এই ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার ফলে ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষণা করে। এই সফলতার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।

১৮৪০ সালে জার্মানির জ্যাকব হেইন পোলিওমাইলিটিস রোগটি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। এই রোগ যে পোলিও ভাইরাসের উপস্থিতির ফল তা খুঁজে পান কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার। ১৯১০ সালের দিকে ইউরোপ আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে নাটকীয়ভাবে পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মহামারী আকার ধারণ করে। সাধারণত গ্রীষ্মকালে এর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ত। ওই সময় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে লাখো শিশু-কিশোর পঙ্গুত্ববরণ করেছিল।

পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হয়। এরপর থেকে এ রোগটি আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আছে। ১৯৫২ সালে জোনাস এডওয়ার্ড সল্ক পোলিওর বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেন।

এই টিকার কার্যোপযোগিতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে আরো দুই বছর। অবশেষে ১৯৫৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আর্সেনাল ইলিমেন্টারি স্কুল দ্য ওয়াটসন হোম ফর চিলড্রেন, পিটার্সবার্গ পেনসেলভেনিয়াতে পরীক্ষামূলকভাবে মানব শিশুর শরীরে এই টিকা প্রয়োগ করা হয়।

পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪টি অঙ্গরাজ্যের ১৮ লাখ শিশুকে এই টিকার আওতায় আনা হয়। ১৯৫৭ সালে আলবার্ট সাবিন পোলিও ভাইরাস নির্মূলের দ্বিতীয় প্রকার টিকা আবিষ্কার করেন। যেটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। এটা খাওয়ার টিকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখন দুই ধরনের টিকাই সারা পৃথিবীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থান, ভৌগোলিক পরিবেশ বিবেচনা করে খাওয়ানোর টিকাকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

পোলিও থেকে মুক্তি জোনাস এডওয়ার্ড সল্কের হাত দিয়ে আসায় এ বিজ্ঞানীর জন্মদিন ২৪ অক্টোবরকে স্মরণীয় করে রাখার এই দিবসটি পালিত হয়। এটা রোটারি আন্তর্জাতিকের দীর্ঘমেয়াদি চেষ্টার সফল প্রয়াস। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পোলিওমুক্তির সাফল্য অনেক বেশি গর্বের। ১৯৭৯ সাল থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করে সচেতন বাংলাদেশ।

তবে পোলিও নির্মূলের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক, জাতীয়, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক টিকা দিবস পালন শুরু করে ১৯৯৫ সাল থেকে। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে রোটারি ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড, নানা শ্রেণী ও সংগঠনের সম্পৃক্ততা, সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলাদেশ খুব দ্রুত পোলিওমুক্তির সফলতা অর্জন করে।

সকালের-সময়

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page