চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী থানার পশ্চিম শাকপুরার বিমল আইচের বাড়ির সুমন কান্তি দেকে পৃথক দুটি মামলায় জেল-জরিমানা দিয়েছেন আদালত। একটি মামলায় ১০ মাসের কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড এবং অপর মামলায় তিন মাসের কারাদন্ড ও ৩ লাখ টাকার অর্থদন্ড দিয়েছেন।
শামুসুল হুদার দায়ের করা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন।
বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট শ্রীপতি পাল জানান, দি নেগোসিয়েশবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী সাব্যস্ত করে দুটি মামলাতেই কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন। প্রথম মামলায় ১০ মাসের কারাদন্ড চেকের সমপরিমান অর্থদন্ড দিয়েছেন। একইভাবে অপর মামলায় তিন মাসের কারাদন্ড ও চেকের সময় পরিমান অর্থদন্ড প্রদান করেছেন।
জানা গেছে, সুমন কান্তি চট্টগ্রামের একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কৌশলে উক্ত কোম্পানির শত কোটি আত্মসাতের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন । বর্তমানে নগরীর সিরাজদৌল্লা রোডে শ্রীনিকেতন, রঙ্গম কনভেনশন সেন্টার, সিটি অব হার্ট কনভেনশন সেন্টার, গোপী অটোস ও গোপী ট্রান্সপোর্ট নামে গাড়ির ব্যবসা রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে–শামসুল হুদার কাছ থেকে দুই দফায় ১০ লাখ ও ৩ লাখ মোট ১৩ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। এর বিপরীতে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ১০ লাখ টাকা চেক প্রদান করেন। ২ ডিসেম্বর ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক পাস হয়নি। এরপর টাকা ফেরত দিতে আসামীর কাছে ২৬ ডিসেম্বর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। অপর চেকটি দেয়ছিল ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর। এরপর ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করেন শামসুল হুদা।
জানা গেছে–সুমন কান্তি দে সীতাকুণ্ডের সীমা স্টিলে চাকরি করতেন৷ কোম্পানির বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতে পালিয়ে যান৷ সেখানে বেশ কয়েক বছর অবস্থান করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন৷ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৮ সালে সীমা স্টিলের করা একটি মামলায় কারাগারে গিয়েছিলেন সুমন কান্তি দে। কারাগার থেকে বেরিয়ে উক্ত মামলা হইতে রক্ষা পাওয়ার জন্য টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটিসহ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠনের পদে আসেন এবং একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় কোটি টাকার বিনিময়ে পরিচালকের পদবী নেন।
এক ক্রেতা জানান, ভারতের শ্রীনিকেতন নাম ব্যবহার করে নগরীর সিরাজদৌল্লা রোডে স্ত্রীর নামে কাপড়ের দোকান খোলেন সুমন দে৷ কিন্তু ভারতীয় শ্রীনিকেতনের সঙ্গে তাদের কোন চুক্তি আছে কিনা জানিনা৷ ফলে ভারতীয় শ্রী নিকেতনের পণ্য মনে করে কিনে প্রতারিত হচ্ছি কি-না জানিনা। এছাড়া ভারতের কলকাতার গোপী ট্রান্সপোর্ট ও গোপী অটোস নামেও ব্যবসা পরিচালনা করছেন তিনি। ব্যবসার এসব টাকা সীমা স্টিলের আত্মসাতের টাকা বলে মনে করছেন সুমনের ঘনিষ্ঠজনেরা৷
এই বিষয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী সুমনদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার বিষয়ে তিনি প্রতিবেদককে জানান, এটা সেটেলমেন্ট হয়ে গেছে। রোববার ডকুমেন্টস পাবেন বলে লাইন কেটে দেন।
এসএস