সকালেরসময় ডেস্ক:: বিটিভির অর্থনীতি ও বাংলাদেশ টকশো অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে, তখন এই ছোট ভূখণ্ডে যেখানে প্রাকৃতিক সম্পদ পর্যাপ্ত নয়, অথচ এক বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু অর্থনীতিবিদ এ দেশকে ‘টেস্ট কেস অব ডেভেলপমেন্ট’ বলে আখ্যায়িত করেন। উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো ছিল অনেক এবং অত্যন্ত কঠিন।
দেশ পরিচালনাকারীদের জন্য একটি বিশেষ পরীক্ষা ছিল তাঁদের দক্ষতা, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনায় কী করে বাংলাদেশকে একটি টেকসই রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তার পরীক্ষা। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে ৪৭ বছরে আমাদের দেশ শুধু টেকসই রাষ্ট্র হিসেবেই পরিণত হয়নি একটি ‘মডেল কেস অব ডেভেলপমেন্ট’ অর্থাৎ উন্নয়নকারী দেশের জন্য বাংলাদেশ একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
উন্নয়নের কতগুলো সামষ্টিক সূচক—যেমন প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, মাথাপিছু আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, এগুলো দেখে বাংলাদেশ উন্নয়নের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে কিছুটা ইতিবাচক চিত্র পাওয়া যায়। দুটি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত, উন্নয়নের সুফলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে যথাযথভাবে পৌঁছাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত আয় এবং জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দিন দিন প্রকট হচ্ছে। বিশেষ একশ্রেণির ধনীর তুলনায় উচ্চ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ব্যক্তিরা দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে নিম্নবিত্ত যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা অসম উন্নয়নের নেতিবাচক ফল ভোগ করছে। সেই সঙ্গে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশের উন্নয়ন-প্রক্রিয়া বিকেন্দ্রীকরণ না করার ফলে যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগ সুফল পাচ্ছে ঢাকা শহরসহ কয়েকটি নগর এবং তৎসংলগ্ন স্থানগুলো। এর তাৎপর্য হলো, উন্নয়নের সুফল, দেশের সম্পদ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণগুলো কিছু কিছু স্থানে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। ফলে এর সুফল থেকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ হচ্ছে বঞ্চিত। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা ও তরুন আওয়ামীলীগ নেতা মাঈন উদ্দীন চৌধূরী সহ প্রমূখ।