কয়লা চুরির মূলহোতা চার এমডি !


২৬ জুলাই, ২০১৮ ১২:৫৯ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: কয়লা খনি দুর্নীতির তদন্তে বড়পুকুরিয়ার কয়লা খনির চার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি। তারা হলেন, খনির সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবীব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আওরঙ্গজেব, আমিনুজ্জামান ও কামরুজ্জামান। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, দায়ীদের মধ্যে তিনজনই এখন সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন। এরমধ্যে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন আওরঙ্গজেব আর রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি আরপিজিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামারুজ্জামান। সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমেদকে সরিয়ে পেট্রোবাংলায় সংযুক্ত করা হয়েছে। যার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে, সেই আমিনুজ্জামান এখন কয়লা উত্তোলনকারী চায়না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন। যদিও তিনি খাতা-কলমে ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ নন। বেনামে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পেট্রোবাংলার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০০৫ সাল অর্থাৎ কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের সময় থেকে যারা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন, তারা সবাই কম-বেশি এই কয়লা চুরির সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে এই চারজন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ছিলেন আমিনুজ্জামান। পেট্রোবাংলা একজন কর্মকর্তা বলেন, চুরি করে ২৩০ কোটি টাকার কয়লা বিক্রি করে দিয়েছেন বড়পুকুরিয়া খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একদিনে এই চুরির ঘটনা ঘটেনি। পর্যায়ক্রমে বছরের পর বছর ধরে খোলা বাজারে বিক্রির সময় এই কয়লা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অবৈধভবে বিক্রির মাধ্যমে ঠিকাদার ও খনি কর্মকর্তারা লাভবান হয়েছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।খনির কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই চুরি শুরু হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

সূত্র জানায়, দিনাজপুরে কয়লা খনির সঙ্গে জড়িত ১৯ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি পেট্রোবাংলার তদন্তে উঠে আসা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এজন্য প্রতিমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার পরও মামলা করতে সময় নেওয়া হয়েছে। রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পেট্রোবাংলার তদন্ত দল যেসব তথ্য প্রমাণ পেয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করেই বুধবার ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা জানান, কয়লা চুরির বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর খনি কর্তৃপক্ষ সিস্টেম লসের কথা বলে আসছে। কিন্তু এই বিষয়টি পেট্রোবাংলা গ্রহণ করেনি। তারা আগে কেন সিস্টেম লসের কথা বলেনি বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

কয়লা খনিটি পরিচালনা করে বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষ। খনিটি একটি কোম্পানি হিসেবে পরিচালিত হয়। অধিকাংশ কর্মকর্তা এখানে চাকরি শুরু করে দীর্ঘ দিন চাকরি করেন।কেবল প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে ওপরের দিকের কিছু পদে পেট্রোবাংলা থেকে লোকবল পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন থাকার কারণে খনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়লার ডিলারদের একটি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্ক ধরেই চুরি হয়।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page