স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বারবার ঢেউ সামলানো সম্ভব না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ৩:৪৭ : অপরাহ্ণ

স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউয়ের’ শঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বারবার এমন পরিস্থিতি হলে সামাল দেওয়া ‘সম্ভব হবে না’। জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি আসে।

তিনি বলেন, আমরা কত চিকিৎসা দেব? কত বেড, কত হাইফ্লো নেইজল ক্যানুলা বাড়াব? কত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করব? হাসপাতাল ও হাসপাতালের বেড রাতারাতি বাড়ানো যায় না। তারপরও আমরা আড়াই হাজার বেড থেকে ৭-৮ হাজার বেডে উন্নীত করেছি। যার ফলে দশগুণ রোগীও সামাল দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বারবার এটা সম্ভব হবে না।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দুই মাসের ‘লকডাউনে’ জনজীবন একপ্রকার অচল ছিল। এরপর সংক্রমণ কমার সঙ্গে সঙ্গে বিধিনিষেধও ধীরে ধীরে শিথিল হতে থাকে। এ বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দেশে দৈনিক শনাক্তের হার নেমে এসেছিল তিন শতাংশের নিচে।

কিন্তু মার্চের শুরুতে সংক্রমণ আবার দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। ৭ এপ্রিল রেকর্ড সাত হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়তে থাকে মৃত্যু। ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল চার দিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর বেশি।

এর মধ্যে সোমবার রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় অধিদপ্তর। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জনে। তাদের মধ্যে ১০ হাজার ৬৮৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ সামাল দেওয়া গেছে। এক সময় দৈনিক মৃত্যু নেমে এসেছিল ৫ থেকে ৭ জনের মতো, সংক্রমণ ছিল সাড়ে তিনশ-চারশর নিচে। মানুষের বেখেয়ালিপনা আর অসতর্কতার কারণে সেটি আবার বেড়েছে। হঠাৎ করে আক্রান্ত কেন ৭ হাজার হল, মৃত্যু কেন একশর বেশি হল- এগুলো দেখার বিষয় আছে।

করোনাভাইরাসের ঢেউ এল কীভাবে, কারা আনল- এগুলো চিহ্নিত করতে হবে। কারণগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে না পারলে বাংলাদেশ সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়বে এবং তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই যে আমরা ঘোরাঘুরি করি বেসামালভাবে।

আমরা বিভিন্ন জায়গায় গেলাম, মাস্ক পরলাম না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলাম না। এই কারণে দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে। একই কাজ যদি আমরা আবার করি তাহলে তৃতীয় ঢেউ আবার আসবে।

অন্যদের মধ্যে বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, পরিবার পকিল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, জাতীয় পুষ্টিসেবার লাইন ডিরেক্টর ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ