বিষয় :

ঈদকে সামনে রেখে অপরাধী চক্রের তৎপরতা..

সাবধান! ছদ্মবেশে ছয় চক্রের সদস্যরা মাঠে


সকালেরসময় রিপোর্ট  ১৯ মে, ২০১৯ ৫:৪৫ : অপরাহ্ণ

 

ঈদকে সামনে রেখে অপরাধী চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। নানা কৌশলে মানুষের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এসব চক্রের মধ্যে রয়েছে অপহরণকারী, ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি, থাবা-পার্টি, এবং টানা-পার্টি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও থেমে নেই এসব অপরাধীদের দৌরাত্ন্য!

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র মতে রমজান মাস এলেই চট্টগ্রামে অপরাধী চক্রের তৎপরতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ছিঁচকে অপরাধীরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই, চুরি, পকেটমারসহ বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়ায়। একই সাথে রয়েছে অজ্ঞান ও মলমপার্টির তৎপরতা। বিশেষ করে ঈদ যত ঘনিয়ে আসে, এদের তৎপরতা তত বাড়তে থাকে।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট, বিপণিবিতান, জনবহুল স্থান, রেল, বাস টার্মিনালে এদের আনাগোনা থাকে বেশি। তবে শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি রয়েছে এসব চক্রের ওপর। ইতোমধ্যে ধরাও পড়েছে বেশ কয়েকজন অজ্ঞান ও মলমপার্টি এবং ছিনতাইকারী দলের সদস্য।

তাদের তৎপরতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির মধ্যেও থেমে নেই। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ছিনতাইকারিরা। পথচারী কিংবা বাসযাত্রীকে অজ্ঞান করে দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নিচ্ছে টাকাসহ মূল্যবান জিনিস।

ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে দুর্বৃত্তদের তৎপরতা তত বাড়ছে। তারা সবসময় চেতনানাশক ওষুধ, মলম, মরিচের গুঁড়া, দৃষ্টি ভ্রম করার টাইগার বাম সাথে রাখে। দুর্বৃত্তররা বাসের যাত্রী সেজে অথবা বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে আকৃষ্ট করে অজ্ঞান করার ওষুধ মিশ্রিত খাবার খাওয়ায়, রাস্তায় খাবারের পসরা বসিয়ে বিশেষ করে আখের রস, ডাব, খেজুর হালুয়া ইত্যাদি এবং সিএনজিতে যাত্রী বেশে অন্য যাত্রীদের ওঠানো কিংবা পান ও জুস খাইয়ে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয় তারা।

তারা কয়েক বছর যাবৎ চট্টগ্রামেরর বিভিন্ন স্থানে একই ভাবে বিভিন্ন লোককে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে আসছে। মূলত এসব ছিঁচকে অপরাধীর বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। এরা দলবদ্ধ হয়ে কাজ করে। রাস্তায় বাসে জানালার পাশে বসা যাত্রী, রিকশাযাত্রী ও মোটরসাইকেল আরোহীর মোবাইল, মহিলার কানের দুল এদের টার্গেট। রাস্তায় ওঁৎ পেতে বসে থাকে এরা। ট্রাফিক সিগন্যাল বা যানজটকে কাজে লাগায় তারা। টার্গেটকৃত ব্যক্তির হাত থেকে মোবাইল বা মহিলার কানের দুল থাবা দিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

ধরার জন্য ধাওয়া করলেও মানুষের ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ায় তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। নিউ মার্কেট চত্বর, বহদ্দার হাট, নতুন ব্রীজ, অলংকার, অক্সিজেন ও গ্রামে-গঞ্জে পর্যন্ত তাদের বিচরণ। সবচেয়ে বেশি নিউ-মার্কেট এলাকায় রিকশাযাত্রীদের টার্গেট করে থাবা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। অন্যান্য এলাকায়ও বাস ও সিএনজি যাত্রীদের টার্গেট করে এই দুর্বৃত্তরা। ঈদ ঘনিয়ে এলে এদের তৎপরতা আরো বেড়ে যায়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আমেনা বেগম বলেন, আমাদের সকলকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া চলাফেরা অবস্থায় অপরিচিত কোনো ব্যক্তির দেয়া খাবার গ্রহণ করা যাবে না, এই বিষয়ে সকলকে সচেতনতার পাশাপাশি সজাগও থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এসব ঘটনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই ভিকটিমকে ছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করতে হয়। ফলে আইনি দুর্বলতার কারণে আসামিরা জামিন বা খালাস পেয়ে যায়। পরে জেল থেকে বের হয়ে তারা কৌশল বদলে আবার ও একই কাজে জড়িয়ে পড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ