হাটহাজারী স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়!


সকালের-সময়  ৩ এপ্রিল, ২০২২ ৩:২৪ : অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম হাটহাজারীর চৌধুরীহাট শাখার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ম্যানেজার মৃনাল কান্তি সূত্রধর। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি, অফিস স্টাফ ও গ্রাহকদের হয়রানি, লোনপ্রতি কমিশন বাণিজ্য, গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার, অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিকসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, মৃনাল কান্তি সূত্রধর দুদকের মামলায় একজন অভিযুক্ত ব্যাংক ম্যানেজার। তার অনিয়ম দুর্নীতি গ্রাহক হয়রানির বিষয়টি নিয়ে অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী প্রতিবাদ করলে তাদের চাকুরীচ্যুত করার হুমকি, শাস্তিমূলক বদলী, মানসিকভাবে হয়রানিসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়–বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পরও ব্যাংক ম্যানেজারসহ অফিস স্টাফরা বদলী হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে চৌধুরীহাট শাখার ম্যানেজার প্রায় ১৪ বছর ধরে টানা দায়িত্বে রয়েছে। মৃনাল কান্তি সূত্রধরের বিরুদ্ধে নগরীর সিডিএ শাখায় থাকা অবস্থায় অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দুদক মামলায় অভিযুক্ত। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়, সেখানে তিনি নামে বেনামে কিনেছেন বহু জমি।

আর এদিকে নগরীর চকবাজারে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও নগরীর নন্দীরহাট এলাকায় তিনটি প্লট কিনেছে তার নামে। স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ ম্যানেজার মৃনাল কান্তি সূত্রধর একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি। গ্রাহকদের সাথে র্দুব্যবহারের ঘটনায় ইতোমধ্যে অনেক গ্রাহক উক্ত ব্যাংক থেকে হিসাব বন্ধ করে অন্য ব্যাংকে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ম্যানেজারের অনিয়ম দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে এম এ রহিম চৌধুরী নামের এক গ্রাহক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

এ বিষয়ে স্ট্যান্ডর্ড ব্যাংক লিমিটেড চৌধুরী হাট শাখার ম্যানেজার মৃনাল কান্তি সূত্রধরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকালের-সময়কে বলেন-আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি পত্রিকা নিউজ করে দিয়েছে, আপনি যদি বিষয়টি একটু বিবেচনায় নেন খুশি হব, আর আপনি আমার অফিসে চলে আসেন, প্রতিবেদক অফিসে যেতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তিনি নিউজ করে দেন বলে লাইন কেটে দেন। পরদিন আবার কল দেয়া হলে তিনি প্রতিবেদকে বলেন, আমার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আপনারা লেখা লেখি করে কিছুই করতে পারবেন না। তবে আপনার সাথে স্থানীয় একটি পত্রিকার একজন সাংবাদিক যোগাযোগ করবে বলে লাইন কেটে দেন।

জানা যায়–বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাহী পরিচালক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও উক্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিভাগের জোনাল ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পরও উক্ত ম্যানেজারের সাথে ব্যাংকের বিভিন্ন পরিচালক ও তাদের আত্বীয় স্বজনদের সাথে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সাহস করছে না সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংক।

এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক চৌধুরীহাট শাখার ম্যানেজার অপারেশন এ. কে এম সাইফুদ্দিন বলেন, ম্যানাজারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এটা সত্য কিনা জানি না, তবে উনি কাজের প্রয়োজনে অফিস স্টাফ সবাইকে চাপে রাখেন এটা হতে পারে, বাড়ি গাড়ি জমি জমা এটা উনার জন্য স্বভাবিক ব্যাপার কারন উনি যে পরিমান বেতন পান সে টাকা দিয়ে প্রতি বছরও একটি করে বাড়ি কিনতে পারে, দুদকের মামলার বিয়ষটি উনার ব্যক্তিগত বিয়ষ এটা নিয়ে মন্তব্য করার মত কিছু নেই।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আরিফ হোসাইন খান জানান, একটি ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা গ্রাহকদের হয়রানি করবে এটা মেনে নেয়া যায় না, যেহেতু গ্রাহকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে পাশাপাশি সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংকেরও দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানানো হয়েছে, একটি চেয়ারে ১৩/১৪ বছর কিভাবে থাকে একই চেয়ারে এতদিন কেউ থাকলেও তোন অনিয়ম দুর্নীতির মধ্যে জড়িয়ে পড়াটা স্বাভাবিক, তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে যদিও কোন ব্যবস্থা না নেয় এর পেছনে কারণ কি সেটা বের করে ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রিয় পাঠক–স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক চৌধুরীহাট শাখার ম্যানেজার মৃনাল কান্তি সূত্রধরের ব্যাংক লোপাটের আরও কিছু তথ্য প্রতিবেদকের হাতে এসেছে, বিস্তারিত দ্বিতীয় পর্বে দেখুন।

এসএস/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ