চিকিৎসার নামে ডাকাতি, এক রাতের ‘আইসিইউ’ বিল লাখ টাকা!


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২২ জুন, ২০২১ ১২:১৮ : পূর্বাহ্ণ

দেশে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ। হাসপাতালগুলোতে দেখা দিচ্ছে আক্রান্ত রোগীদের চাপ, যাদের অধিকাংশই হন্যে হয়ে ছুটছেন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য। একটি শয্যা আর সুস্থ হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।

এ সুযোগে আইসিইউ’র ভাড়া সাধারণ সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি রাখা হচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে রোগীর পরিবার, কেউ কেউ হচ্ছেন নিঃস্ব।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বেসরকারি মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি এক রোগীর এক রাতের বিল এসেছে প্রায় ৯৬ হাজার টাকা। বিপুল অঙ্কের এ বিল মেটাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে তার পরিবার।

রোগী হাবিবুর রহমানের ছেলে অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার রাতে তার বাবাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করান তারা। চিকিৎসকরা বাবা করোনায় আক্রান্ত হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন। এটি এখনো নিশ্চিত না হলেও চিকিৎসাধীন থাকার মাত্র ১২ ঘণ্টায় আমাদের হাতে ৯৫ হাজার ৯৮২ টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সকালের-সময় হাতে আসা সেই বিলের কপি থেকে জানা গেছে, রোগীর এক রাতের বেড চার্জ বাবদ রাখা হয়েছে ৯ হাজার টাকা, ওষুধ বাবদ ৩১ হাজার ৭২২ টাকা, অক্সিজেন চার্জ ৫ হাজার ৫০০ টাকা, প্যাথলজি বাবদ ১৩ হাজার ৬৩০ টাকা, সার্ভিস চার্জ ১৫ হাজার ৯৯৭ টাকা, কনসালটেশন ফি ৭ হাজার ৩৭০ টাকা এবং রেডিওলজি বিল ৭ হাজার ৬২ টাকা। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ কনসালটেশন চার্জ, নেবুলাইজেশন চার্জ, অ্যাম্বুলেন্স চার্জ বাবদও বিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গেলাম মওলা মুরাদ বলেন, ফাদার্স ডে’র এক রাত (১২ ঘন্টা) মেট্রোপলিটন হসপিটালের আইসিইউতে আব্বাকে রাখার বিল করলো ৯৬ হাজার টাকা। কাকে বুঝাই দুঃখের কথা। কোথায় যাই? কেউ কি নেই গলাকাটা এই বিল বিষয়ে একটি ভূমিকা রাখার? তিনি আরো বলেন, এত কম সময়ে এত বেশি টাকার বিল অবিশ্বাস্য! এমন অবস্থা হলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?

রোগীর পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ সেলিম বলেন, এখানে ভর্তি হওয়া রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। অযথা কারণ দেখিয়ে বাড়তি বিল দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভর্তির সময় ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না।

যে কারণে হাই ফ্লো অক্সিজেন দিতে হয়েছে। করোনার ওষুধগুলোও খুবই দামি। এসব কারণেই বিল এত বেশি এসেছে। বিলে অযৌক্তিকভাবে এক টাকাও বেশি ধরা হয়নি।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ