মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারকে দেয়া হচ্ছে ডিভিশন সুবিধা


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১৭ মে, ২০২১ ১১:২৪ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার ঘটনায় আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পাচ্ছেন ডিভিশন সুবিধা। তার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ডিভিশন সুবিধা প্রদানের আদেশ দেন।

সোমবার (১৭ মে) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এর আদালত তার ডিভিশন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী আরিফুর রহমান।

তিনি বলেন, বাবুল আক্তারকে কারাগারে পাঠানোর পর আমরা আদালতে তার ডিভিশন সুবিধার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এর আগে ১২ মে পিবিআই গ্রেপ্তার দেখিয়ে একই আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত বাবুল আক্তারের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পিবিআই কর্মকর্তাদের দাবি, ৫ দিনের রিমান্ডেও মুখ খোলেননি বাবুল আক্তার।

এরপর আজ দুপুরে পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য হাজির করা হয় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে। বিচারক নিয়ম অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ার জন্য তাকে তিন ঘণ্টা সময় দেন। কিন্তু জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েও শেষ পর্যন্ত আদালতে জবানবন্দি দেননি বাবুল আক্তার। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গতকাল রোববার এই মামলায় আরও ২ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন- মোতালেব মিয়া (ওয়াসিম) ও আনোয়ার হোসেন। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। এ নিয়ে মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া নতুন মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। চারজনই নতুন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

তথ্যমতে, ওয়াসিম ও আনোয়ার প্রায় ৫ বছর ধরে কারাগারে আছেন। মিতু হত্যার পর ২০১৬ সালের ২৬ জুন আনোয়ার ও ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। এরপর মামলার তদন্তে গতি আসে। ১৫ মাস পর গত ১১ মে বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। তবে এর আগেই ঘটনার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পরদিন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বাবুল আক্তারের মামলার।

এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নতুনভাবে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আরও ৭ জন আসামি আছেন।

এরা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা (৪০), এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়া (৪১), মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম (২৭), মো. আনোয়ার হোসেন (২৮), মো. খায়রুল ইসলম ওরফে কালু (২৮), সাইদুল ইসলাম সিকদার (৪৫) ও শাহজাহান মিয়া (২৮)। এই মামলাও তদন্ত করছে পিবিআই।

মোশাররফ হোসেনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ মে বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে পিবিআই। আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাবুল আক্তারকে পিবিআই হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গত ১২ মে রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীরহাট এলাকা থেকে র‍্যাবের একটি দল নতুন মামলার আসামি মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কুকে গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। তাকেও ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ