পদোন্নতি বাণিজ্য—ইস্টার্ন রিফাইনারির বিরুদ্ধে নয়ছয়ের অভিযোগ!


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৭:১৮ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় স্বায়ত্ত্বশাসিত সরকারি প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্র—জানায় সমিতির নেতাদের গোপন ‘গ্রিন সিগনাল’ পেলেই মিলছে পদোন্নতি। গ্রিন সিগন্যাল না পেলে আটকে থাকছে পদোন্নতি।

জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে এক বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৪৬ জনকে নিয়োগ দেয় ইস্টার্ন রিফাইনারি। ওই সময় নিয়োগপ্রাপ্ত প্রত্যেককে পদোন্নতি দেওয়া হলেও সমিতির নেতাদের ‘সুপারিশ’ না থাকায় আটকে যায় দুজনের পদোন্নতি। অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম না মেনে ৩ থেকে ৪ বছরের জুনিয়র অপারেটরদের অনেকেও পদোন্নতি পেয়ে হয়ে গেছেন ‘কর্মকর্তা’।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পছন্দের লোক হলে অথবা ইস্টার্ন রিফাইনারি এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি-সম্পাদকের গোপন ‘গ্রিন সিগনাল’ মিললে সহজেই পাওয়া যায় পদোন্নতিসহ নানান সুবিধা। তবে এই ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেতেও ঘাটে ঘাটে দিতে বিশেষ আর্থিক সুবিধা।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ট্রেইনি হিসেবে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে যোগ দেন মো. ইসমাইল ও ফরহাদসহ মোট ৪৬ জন। দুই বছর সন্তোষজনক ট্রেনিং পিরিয়ড শেষে ১৯৯৭ সালে কোয়ালিটি কন্ট্রোল (কিউসি) বিভাগে টেস্টার হিসেবে প্রত্যেকের চাকরি স্থায়ী করা হয়।

পরবর্তীতে পাঁচ বছর পর পর আরও দুই ধাপে প্রত্যেককে দুই বার পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর থেকে অন্যদের পদোন্নতি হলেও আটকে থাকে ইসমাইল ও ফরহাদের পদোন্নতি। অথচ এ দুজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিভাগীয় সুপারিশও ছিল।

৯৫ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৬ জনের মধ্যে এ দুজন ছাড়া বাকিরা সবাই এখন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে ৩ থেকে ৪ বছরের জুনিয়র সবাইকে ডিঙ্গিয়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে মো. তিতুমির রহমান নামে একজনকে।

যিনি বর্তমানে ইস্টার্ন রিফাইনারির এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি। এরপর পদোন্নতি পেয়েছেন এনামুল কবির, জসীম উদ্দিন খান, মিজানুর রহমান, শরিফুল হাসান, নুরুল আবসার, ইলিয়াছ এবং মো. জাহাঙ্গীর।

পদোন্নতিপ্রাপ্তরা সবাই ইসমাইল ও ফরহাদের জুনিয়র হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার মধ্যে ইসমাইল গত ১৪ বছর ধরে কিউসি এসিস্ট্যান্ট ও সিনিয়র কিউসি এসিস্ট্যান্ট পদে ও ফরহাদ সিনিয়র মেইনটেন্যান্স হিসেবে অদ্যাবধি কর্মরত রয়েছেন। ১৯৯৫ সালের নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে শুরুতে সবাই বিভিন্ন সেকশনে ট্রেইনি হিসেবে যোগদান করেন।

এরপর পদোন্নতি দেওয়া হয় জুনিয়র অপারেটর, অপারেটর, অপারটের স্ট্যান্ড সবশেষ অফিসার বা কর্মকর্তা হিসেবে। নিয়ম অনুসারে স্থায়ীকরণের পর পাঁচ বছর অন্তর অন্তর দেওয়া হয় পরবর্তী পদোন্নতি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানের কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রথম সারির নেতারা যার ব্যাপারে গ্রিন সিগনাল দেয় তাদেরকে সব ধরনের সুবিধা দেন এমডি।

এ বিষয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. লোকমান সকালের-সময় ডটকমকে বলেন, পদোন্নতি ব্যাপারে আপনারা যে অভিযোগ পেয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, এখানে দুর্নীতির কোন সুযোগ নেই। আপনি এই বিষয়ে নিউজ না করে সরেজমিন তদন্ত করে দেখেন।

তথ্যসূত্র—সিপি

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ