চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা—ভোলার জামিন নামঞ্জুর


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ৪:৪৩ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এহতেশামুল হক ভোলার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট বেঞ্চ ভোলাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে আজকে আত্মসমর্পণ না করে বরং সময়ের আবেদন করে। তার এই আবেদনে আমরা তীব্র বিরোধিতা করি।

ভোলা হাইকোর্টের নির্দেশনা পালন না করায় আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো এর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি এহতেশামুল হক ভোলাকে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিহত মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ভোলা। ২০১৬ সালের ২৭ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে ভোলাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ভোলার স্বীকারোক্তি মতে ভোলার সহযোগী মনিরের হেফাজত থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মিতু হত্যা ও অস্ত্রের দুই মামলায় ভোলাকে আসামি করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল ৭টা ১৭ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে। প্রথমে তারা তাকে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ৩ বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার দায়ের করেন।

এজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যদিও এদের মধ্যে দু’জন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছে দু’জন। পুলিশের মতে, নিখোঁজ রয়েছেন কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্বদানকারী মুসা।

এছাড়া স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। ২৯ মে থেকে বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে আছেন।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ