বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারালো জিম্বাবুয়ে


সকালের-সময় স্পোর্টস ডেস্ক  ২৪ জুলাই, ২০২১ ২:০২ : পূর্বাহ্ণ

হারারেতে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতা নিশ্চিত করলো জিম্বাবুয়ে। এদিন প্রথমে ব্যাট করে ১৬৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১৪৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। সিরিজে স্বাগতিকরা সমতায় (১-১) ফেরায় শেষ ম্যাচটি হয়ে থাকলো সিরিজ নির্ধারণী।

১৬৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশ। দলীয় ১৭ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নাইম শেখ ৮ বলে ৫ রান ও সৌম্য সরকার ৭ বলে ৮ রান করে মাঠ ছাড়েন। আগের ম্যাচে রেকর্ড জুটি করা দুই ওপেনার এদিন পুরোপুরি ব্যর্থ।

১৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর সাবধানী শুরু করেন সাকিব। কিন্তু নিজের ঝুলিতে ১২ রান করতেই বেখেয়েলি শটে আত্নাহুতি দেন সাকিব। মাসাকাদজার শর্ট বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে চাইলেন তিনি। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় কাভারে ক্যাচ দেন সিকান্দার রাজার হাতে।

গত ম্যাচে তিনে ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহ এই ম্যাচে নামেন পাঁচে। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দলকে বিপদে ফেলে মাত্র ৪ রান করেই সাজঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক। স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই অধিনায়কের পথ ধরেন মেহেদী। মাসাকাদজার বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে তুলে মারা মেহেদী পার করতে পারেননি সীমানা। লং-অফে ধরা পড়লেন রায়ান বার্লের হাতে। ৪ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ, ৫৩ রানেই নেই ৫ উইকেট।

আগের ম্যাচে দুর্দান্ত নুরুল হাসানের সামনে সুযোগ ছিল আজকের ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখা। কিন্তু দ্রুত সাজঘরে ফেরেন তিনিও। চাতারার বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে অফস্টাম্পের বাইরের বলে মেরে ধরা পড়েছেন ডিপ পয়েন্টে। ৮ বলে ৯ রান করেন নুরুল।

অভিষেকে আফিফ হোসেনকে নিয়ে ডতৃহ লড়াই চালিয়ে গেছেন শামীম হোসেন। মাধেভেরেকে ছক্কা হাঁকিয়ে ১৫তম ওভারে দলের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান তিনি। তার ব্যাটে জয়ের আশা জাগলেও তা পূরণ করতে পারেননি শামীম। লুক জঙ্গুয়ের বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার হাতে ধরা পড়েন এই তরুণ ক্রিকেটার। ১৩ বলে দুই ছক্কা ও তিন চারে শামীম বিদায় নেন ২৯ রানে।

শামীমের বিদায়ের পর অনেকটা সময় টিকে ছিলেন আফিফ হোসেন। চেষ্টা করছিলেন যতটা কাছে যাওয়া যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরে গেলেন তিনিও। টেন্ডাই চাতারার বলে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে পারেননি, মিল্টন শুম্বার হাতে ধরা পড়েন তিনি। একটি করে ছক্কা ও চারে ২৫ বলে ২৪ রান করেন আফিফ।

শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩১ রান। প্রতিটি বলেই তাই বাউন্ডারির সন্ধানে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। লুক জঙ্গুয়ের আগের বলে বাউন্ডারি মেরে পরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই অলরাউন্ডার। ১৫ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৯ রান করেন সাইফ। লুক জঙ্গুয়ের করা শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন তাসকিন আহমেদ। তাতে এক বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। এতে এই সফরে প্রথমবারের মত হারের মুখ দেখে বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদী হাসানের প্রথম বলেই ছয় মারেন মাধভেরে। পরের বলে চার। পঞ্চম বলে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মেহেদী। তাদিওয়ানশে মারুমানিকে বোল্ড করে প্রথম উইকেট পেল বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে উইকেট পেলেন সাকিব। জিম্বাবুয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান চাকাভাকে ফিরিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ৯ বলে ১৪ রান করে ফিরেছেন চাকাভা।

১৪তম ওভারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি পূর্ণ করেছেন ওয়েসলি মাধভেরে। শুরুতে মেরে খেললেও ধীরগতিতে এগিয়েছেন তিনি। ৪৫ বলে পূর্ণ করেছেন তার অর্ধশতক। মায়ার্সকে সঙ্গে নিয়ে বড় স্কোরের দিকে এগুচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। তবে দলীয় ৯৯ রানে শরীফুলের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মেহেদী হাসানের তালুবন্দী হলেন তিনি। এতে ২১ বলে ২৬ রান করে ফেরেন মায়ার্স। তার বিদায়ে ভাঙলো ৫৭ রানের জুটি।

দলীয় ১২২ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। সাকিবের বলে রান নিতে গিয়ে সৌম্যর সরাসরি থ্রোতে ফিরতে হয়েছে তাকে। ওপেনিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের ভুগিয়েছে মাধেভেরে। ৫ চার ও ৩ ছয়ে ছড়ি ঘুরিয়েছেন তিনি। অবশেষে ১৮তম ওভারে আফিফের ক্যাচ বানিয়ে মাধেভেরেকে ফেরান শরীফুল। ৫৭ বলে তার সংগ্রহ ৭৩ রান।

শেষ ওভারের শুরুটা ভালোই করেছিলেন শরীফুল, এরপর ছয় মেরেছেন রায়ান বার্ল। শেষ বলে গিয়ে অবশ্য ক্যাচ দিয়েছেন লুক জঙ্গুয়ে। জিম্বাবুয়ে থেমেছে ১৬৬ রানেই। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শরীফুল, একটি করে নিয়েছেন মেহেদী ও সাকিব।

একমাত্র টেস্টে জয়ের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে বাংলাওয়াশ করেছে সফররত বাংলাদেশ। এরপর তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও জয় পেয়েছে টাইগাররাই। অতপর দ্বিতীয় ম্যাচে আজ বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়ে সিরিজে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল জিম্বাবুয়ে।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ