পি কে হালদারকে দেশে ফেরানোর প্রশ্নে হাইকোর্টে রুল


নিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ মে, ২০২২ ৪:৩৬ : অপরাহ্ণ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের তথ্য আদালতকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষ এসংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন।

মঙ্গলবার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় থাকবে বলে জানিয়েছেন আদালত। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, আমাদের মেসেজ ক্লিয়ার। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, সে যে–ই হোক। আমরা এ ব্যাপারে সিরিয়াস।

পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনা প্রশ্নে দেড় বছর আগে স্বতঃপ্রণোদিত রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। এর মধ্যেই গত শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন পি কে হালদার। বাংলাদেশে আর্থিক খাতে আলোচিত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগ রয়েছে।

২০১৩ সালের অক্টোবরে ভারতের সঙ্গে বহিঃসমর্পণ চুক্তি করে বাংলাদেশ। ওই চুক্তির আওতায় পি কে হালদারকে ফেরানোর চেষ্টা হতে পারে বলে ইতোমধ্যে ইংগিত মিলেছে সরকারের তরফ থেকে।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলে হাজার কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। ইতোমধ্যে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করা হয়েছে।

২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে পি কে হালদার পুঁজিবাজার থেকে বিভিন্ন নামে শেয়ার কিনে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) মালিকানায় এসেছিলেন। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে ২০১৯ সালের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে। বিদেশে থাকা পিকে হালদার ২০২০ সালের ২৮ জুন আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন।

আদালত তাতে অনুমতি দিলেও পিকে হালদার না ফেরায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়। ঢাকার জজ আদালত পি কে হালদারের সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক করার আদেশ দেয়। এছাড়া পলাতক অবস্থায় তার বক্তব্য বা সাক্ষাৎকার গণমাধ্যমে প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় হাই কোর্ট।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ