ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়া চসিক কর্মকর্তার ৪ বছরের কারাদণ্ড


নিউজ ডেস্ক  ১ মে, ২০২৩ ১২:০৭ : পূর্বাহ্ণ

ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাতা ফাঁদে ধরা পড়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উপ-কর কর্মকর্তা আলী আকবর। তাকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু।

উপ-কর কর্মকর্তা আলী আকবর চসিকের রাজস্ব সার্কেল-২ এর ভারপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তা ছিলেন। ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়। ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরের বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে চসিকের রাজস্ব সার্কেল-২ কার্যালয়ে ঘুষের ২০ হাজার টাকা নিয়ে দুদকের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

আসামি আলী আকবর মামলার বিচার চলাকালীন থেকে কারাগারে আছেন। মামলার মূল সাক্ষী জামাল উদ্দিন আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, তাকে সাক্ষ্য না দিতে হুমকি দিয়েছেন আলী আকবর। এছাড়া আদালতে কথিত ঝাঁড়ফুকের উদ্দেশে তার গায়ে গোলাপ ফুলের শুকনো পাপড়ি ছিটিয়ে দেন আলী আকবর, যাতে তিনি সাক্ষ্যদানে বিরত থাকেন।

এ অভিযোগ পাবার পর আদালত আলী আকবরের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠান। তাকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়েছিল। পরে তাকে সাজামূলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু জানান, আদালত দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় আসামিকে দুই বছর ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, হোল্ডিংয়ের মালিকানা পরিবর্তন ও কর পুনর্নির্ধারণের জন্য চান্দগাঁও থানার রূপালী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা রাজা মিয়ার কেয়ারটেকারের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন আলী আকবর। পরে তিনি ২০ হাজার টাকায় কাজটি করে দিতে রাজি হন। ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কেয়ারটেকার জামাল উদ্দিন দুদক কার্যালয়ে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে আলী আকবরকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে ধরতে সাত সদস্যের একটি টিম গঠন করে ফাঁদ পাতে দুদক। ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে চসিকের রাজস্ব সার্কেল-২ কার্যালয়ে যান জামাল উদ্দিন। আলী আকবরের হাতে ঘুষের টাকা দেয়ার সাথে সাথে দুদক টিম অভিযান চালিয়ে তাকে ধরে ফেলে। জব্দ করা হয় ২০ হাজার টাকা।

এ ঘটনায় আলী আকবরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান।

ওই মামলা তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক জাফর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি আদালত আসামি আলী আকবরের বিরুদ্ধে এজাহারে উল্লিখিত ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। অভিযোগপত্রভুক্ত ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত এ রায় দিয়েছেন।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ