এলবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রাইসুলসহ বাবা-ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা


নিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ৩:১৯ : অপরাহ্ণ

ব্যবসায়ীক চুক্তি ভঙ্গ করার অভিযোগে এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাইসুল উদ্দিন সৈকত (৪২), তার ছোট ভাই ও পিতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ইনোভেটিভ ফার্মার স্বত্ত্বাধীকারি কাজী মোহাম্মদ শহিদুল হাসান। আজ রোববার চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব এর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন তিনি।

আদলত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), চট্টগ্রাম মেট্রোকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী সুলতান মোহাম্মদ অহিদ।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন–এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাইসুল উদ্দিন সৈকত, তার ছোট ভাই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ মুনতাহার উদ্দিন (৩৭) ও তাদের পিতা নিজাম উদ্দিন (৬৫)। তারা সকলেই চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানার গোল পাহাড় মোড় ও আর নিজাম রোড় সুবর্ণ আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সুলতান মোহাম্মদ অহিদ বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ওষুধ বাজারজাতকরণের জন্য ইনোভেটিভ ফার্মার সঙ্গে ২০১৪ সালে একটি চুক্তি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ১০ বছর। কিন্তু আসামিরা চুক্তিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী ভঙ্গ করে বাদীর বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি করেছে। এ ছাড়া ২০১৬ এলবিয়ন তাদের কিছু পণ্য ইনোভেটিভ ফার্মার কাছে জিম্মি রাখে। এর বিনিময় ইনোভেটিভ ফার্মা ৯টি চেক জামানাত সরূপ রাখে।

যেগুলোতে কোন টাকা উল্লেখ ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে ইনোভেটিভ ফার্মার কাছে জিম্মি রাখা জিনিস এলবিয়ন ফেরত নিয়ে যায়, কিন্তু চেকগুলো ফেরত দেয়নি। পরবর্তীতে চেক চাইলে আসামিরা বিভিন্ন ধরনের হুমিক প্রদান করে। মূলত প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আসামিরা চেকগুলো নিয়েছে এমন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়– ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ১০ বছরের জন্য পরিবেশক হিসেবে ইনোভেটিভ ফার্মাকে নিয়োগ করেন এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী এলবিয়ন গ্রুপ ওষুধ তৈরির পর তা বাজারজাত করবে ইনোভিটিভ ফার্মা। এসব ওষুধ বিক্রয়ের ৪০ শতাংশ পাবে এলবিয়ন গ্রুপ ও ৬০ শতাংশ পাবে ইনোভেটিভ ফার্মা। চুক্তি শেষ হওয়ার আগে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশক নিয়োগ দিতে পারবে না। কিন্তু তারা এ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে।

২০১৬ সালের আগস্টে ভ্যাট ফাঁকি দিতে ইনোভেটিভ ফার্মার গোডাইনে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার ওষুধ রাখে। এর বিনিময়ে ইনোভেটিভ ফার্মার কাছ থেকে ৯টি খালি চেক নেয়। এসব ওষুধ বিক্রয়ের পর শত ভাগ মূল্য পরিশোধ করলে চেক ফেরত দেবে এলবিয়ন গ্রুপ। কিছুদিন পর এলবিয়ন গ্রুপ তাদের ওষুধ ফেরত নিয়ে যায়। কিন্তু ইনোভেটিভ ফার্মাকে চেক ফেরত দেয়নি।

পরে ২০২১ সালের ২৯ জুন এসব চেকের মাধ্যমে এলবিয়ন গ্রুপ ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৯ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে। এ ছাড়া চেক ফেরত চাইলে তা দেবে না বলে জানিয়ে দেয় এলবিয়ন গ্রুপ। পরে এ বিষয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মামলার বাদী। সম্প্রতি এসব চেক ফিরে চাইলে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেন এলবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া এসব চেক ফেরত পেতে ২ কোটি টাকা দিতে হবে বলেও জানান।

বিষয়গুলো জানার জন্য এলিবিয়ন গ্রুুপের ওয়েবসাইটের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তদের কর্পোরেট অফিসের এক কর্মচারী কল রিসিভ করে বলেন, স্যারের নাম্বার ফার্মেশন ছাড়া দেওয়া যাবে না, আমি উনার সাথে কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি বলে লাইন কেটে দেন।

সকালের-সময়/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ