বাজেটে আয়ের কথা চিন্তা না করে ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে : অর্থমন্ত্রী


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১৩ জুন, ২০২০ ৯:২৯ : পূর্বাহ্ণ

২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে তা মুলত করোনাভাইরাসের কারণে ঝুঁকিতে পড়া মানুষদের বাঁচানোর লক্ষ্যেই করেছে সরকার। এই বাজেটের মাধ্যমে মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ধরে রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে। এজন্য আয়ের কথা চিন্তা না করেই ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস পরবর্তী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়াও এ বাজেটের লক্ষ্য।

শুক্রবার বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে এমন মতামত জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনা পরিস্থিতির কারণে সংবাদ সম্মেলনটি প্রচলিত ব্যবস্থায় আয়োজন না করে অনলাইনে করা হয়। এর শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী। এরপর অনলাইনে সংযুক্ত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন কয়েকজন মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, গভর্নর, এনবিআরের চেয়ারম্যান ও অর্থ সচিব।

অর্থমন্ত্রী সূচনা বক্তব্যে বলেন, এবারের বাজেট স্বাভাবিক বাজেট নয়। স্বাভাবিক বাজেট হলে সংবাদ সম্মেলনের অনুষ্ঠান হতো অন্য জায়গায়, অন্যভাবে। ক্রান্তিকালে এটি গতানুগতিক ধারার বাজেট নয়। বাজেট প্রনয়নের প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত ছিল না। অতীত অর্জন, অভিজ্ঞতা, মানুষ কিভাবে, কি স্বপ্ন দেখে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাজেট করা হয়েছে। স্বাভাবিক পথ ছিল রুদ্ধ। ফলে ভিন্ন পথে করতে হয়েছে। অনেকের কাছে অসঙ্গতি মনে হতে পারে। কিন্তু উপায় ছিল না। বাজেট না থাকলে সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ নেওয়া যায় না। এজন্য বাজেট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ, শ্রমজীবী, দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা করতে। সরকারের মূল লক্ষ্য মানুষকে বাঁচানো। স্বাভাবিক নিয়মে বাজেট করা না হলেও যেভাবে সাজানো হয়েছে, সেভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। সরকার আশা করছে, করোনা প্রলম্বিত হবো না। আইএমএফ বলছে, আগামী অর্থবছরে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। অবকাঠামো প্রস্তুত।

আমরাও আশা করছি, ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তা হবে। যদিও কষ্টসাধ্য কাজ। কারণ দেশের কর জিডিপি অনুপাত ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এটাকে বাড়িয়ে ১৫ থেকে ১৭ শতাংশে নেওয়া গেলে প্রচুর উদ্বৃত্ত অর্থ থাকবে। এজন্য পূর্নাঙ্গ অটোমেশন দরকার। ভ্যাটের জন্য যেসব মেশিন কেনার কথা ছিল করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে তা কেনা সম্ভব হয়নি। প্রক্রিয়াধীন আছে। আশাকরি দ্রুত কাজটি শেষ হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শেকড়ের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে। সারা বিশ্বের শেকড় হচ্ছে কৃষি। কৃষিকে নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে। এমনভাবে সাজাবো যে আগামীতে এগোতে পারবো। সরকারের বর্তমানে দুটো লক্ষ্য।

প্রথমত করোনার বিস্তার রোধ করা। দ্বিতীয়ত অর্থনীতিতে এর যে নেতিবাচক প্রভাব তা মোকাবিলা করা। বিভিন্ন খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের মাধ্যমে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। হঠাৎ করে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়েছে। খাবার, চাকরি, সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির জন্য অনেক অর্থের দরকার পড়েছে। সেই কাজটি করা হয়েছে।

এরপর তিনি সাংবাদিকদের থেকে প্রশ্ন আহ্বান করেন। নিজে এবং অনুষ্ঠানে সংযুক্ত অন্যান্য মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সচিবরা তার উত্তর দেন।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ