ডিজেলে বার বার লোকসান দিচ্ছে বিপিসি!


নিজস্ব প্রতিবেদক ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১:৪১ : পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতি লিটার ডিজেলে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান দিচ্ছে। সে কারণে এই মুহুর্তে দাম কমানোর কোন সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে বিপিসির লিয়াজো অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ এ মন্তব্য করেন।

বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে ১০৩ ডলার থাকলে আমরা ব্রেক ইভেনে থাকি। কিন্তু এর বেশি হলেই আমাদের লোকসান হয়। গত নভেম্বর মাসে গড়ে ব্যারেলপ্রতি পরিশোধিত ডিজেলের দাম ১০৫ ডলার ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে আপাতত কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, জ্বালানি তেল বিক্রি করে বিপিসি লাভ করছে। বিশেষ করে প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রিতে বিপিসির লাভ হচ্ছে ২৯ টাকা বলে সিপিডি দাবি করে।

গত ৫ আগস্ট সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। সেই সময়ে ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। এর আগে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়। সেই সময় এই দুই জ্বালানির দাম লিটারপ্রতি ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। ৮ মাসের ব্যবধানে আবার বাড়ানো হয় তেলের দাম।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলারে উঠেছিল। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৭৮-৮০ ডলারের মধ্যে। দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সময় বারবার বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশের বাজারেও কমানো হবে। কিন্তু বিপিসির হিসাবে এখনও তারা লোকসান গুণছে। যদিও তাদের এই হিসেবকে অনেকেই যথাযথ মনে করেন না।

অন্যদিকে সরকার সকল ধরণের জ্বালানি তেল থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ৩ মাস পর পর দর সমন্বয় করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কিনতে হবে আন্তর্জাতিক বাজারদরে। দর চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এলপি গ্যাসের দর পদ্ধতিকে মডেল বিবেচনা করা হচ্ছে। এলপিজির দর প্রতিমাসে নির্ধারণ করা হলেও জ্বালানি তেলের দাম ৩ মাস পর পর দর চূড়ান্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) প্রতিমাসে এলপিজির দর নির্ধারণ করে আসছে। গণশুনানির মাধ্যমে আমদানিকারকদের খরচ ও কমিশন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন প্রতিমাসে শুধু গ্যাসের দর অংশ ওঠানামা করে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে পণ্যমূল্য বেড়ে যায়, কমে গেলে সেই অংশটুকু কমে যায়।

ডিজেল পেট্রোলের ক্ষেত্রেও এমন পদ্ধতি অনুসরণের কথা ভাবা হচ্ছে। জাহাজ ভাড়াসহ পরিচালন খরচ এবং আমদানি ব্যয় আলাদা করা হবে। পরিচালন খরচ অপরিবর্তিত থাকবে আর, ৩ মাস পর আন্তর্জাতিক বাজারের দরের সঙ্গে কমবেশি হবে দেশের জ্বালানি তেলের বাজারদর। বিইআরসি যাতে আইনী কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজটি করতে পারে, সে জন্য ঝুলে থাকা বিইআরসি প্রবিধানমালার সংশোধনীসহ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সকালের-সময়/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ