পণ্য বিক্রয়ে রকমারি অফারের কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েও সময়মতো সরবরাহ না করার অভিযোগ বাড়ছে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও পণ্য না পেয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভ ঝাড়ছেন আলেশা মার্টের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে।
আলেশা মার্টের পেসবুক পেজে রয়েছে গ্রাহকদের নানা অভিযোগ। পেজে অনেকে অভিযোগ করেছেন পণ্য সরবরাহের তারিখ পেরিয়ে গেলেও অনেক গ্রাহক পণ্যও পাচ্ছেন না, রিফান্ডও পাচ্ছেন না। এসব বিষয় নিয়ে কল সেন্টারে ফোন করেও গ্রাহকরা কথা বলতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সোয়েব উদ্দিন বিপু নামে এক গ্রাহক ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেছেন, গ্রোসারি আইটেম (আইডি ২৭৫০২৫) আপনারাই ক্যানসেল করেছেন এক মাসের বেশি হয়েছে কিন্তু রিফান্ডও দিচ্ছেন না কেন?
সেখানে রফিক ইসলাম নামে আরেকজন অভিযোগ করে বলেছেন, আমার প্রোডাক্ট পেতে আর কত দিন লাগবে, ৫ দিনের কথা বলে ১৮ দিন পার।
মো. তারিকুল ইসলাম নামে একজন অভিযোগ করে বলেছেন, আমার অর্ডার আপনারাই ক্যানসেল করলেও রিফান্ড করবেন বলে এখন আর খবর নেই। কল সেন্টারে ফোন করেও রেসপন্স পাচ্ছি না। ইভ্যালি আর আপনাদের মাঝে কোনো তফাত নেই। সব দালাল চক্র।
আহনাফ তাহা নামে একজন লিখেছেন, আলেশা মার্টের কেনো রেসপন্স নেই। মে মাসে বাইকের অর্ডার ছিল, এখনও পাচ্ছি না। অনুগ্রহ করে আমার বাইকটি না দিলে রিফান্ড করে আমার টাকা ফেরত দেন প্লিজ।
তথ্যমতে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলেশা মার্টে ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) বা পণ্য হাতে পাওয়ার পর পেমেন্ট পদ্ধতি নেই। ফলে এখানে পণ্য কিনতে হলে অবশ্যই আগে থেকে অনলাইনে পেমেন্ট দিতে হবে। পেমেন্ট দেয়ার কয়েক মাস পর পণ্য পাওয়া যায়।
মূলত বাজার মূল্যের চেয়ে কম টাকা বা ডিসকাউন্টে পণ্য দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অফার দেয়া হয় বলে মানুষ এখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে আলেশা মার্ট কখনও নির্ধারিত সময়ে পণ্য ডেলিভারি দেয়া হয় না। এমনকি দুই তিন মাস অপেক্ষায় রেখে গ্রাহককে বলা হয় স্টক আউট হওয়ার কারণে পণ্য দেয়া যাচ্ছে না।
আর যাদের পণ্য ডেলিভারি দেয়া হয় না তাদের সরাসরি টাকা ফেরত দেয়া হয় না। পণ্য অর্ডার করে টাকা পরিশোধ করার পরও সেটা নির্ধারিত সময়ে গ্রাহক না পাওয়া, প্রসেসিংয়ের নামে দিনের পর দিন পণ্য আটকে রাখা, হেল্পলাইনে কল করে অভিযোগ করলে সেটা আমলে না নিয়ে তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়া, সাধারণ গ্রাহকদের এমন নানা হয়রানি আর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
মাসুম আরেফিন নামে আরেক ভুক্তভোগী গ্রাহক বলেন, অনেক আশা করে ৫০ শতাংশ অফারে একটা পণ্য অর্ডার করি। সব মিলিয়ে ২ মাস ১৫ দিন চলছে। কবে পণ্যটি পিকড হবে আর কবেই সেটা ডেলিভারি হবে এখনও শিওর না। সবই ধোঁয়াশা। অনেকবার মেইল আর ফোন দেয়া হয়েছে। বাকিটা ইতিহাস। অনেক শখ করে আলেশা মার্টে অর্ডার করেছিলাম। এসব কি দেখার কেউ নেই? আমার পণ্যটা দ্রুত হাতে পেতে চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলেশা মার্টের হেড অব পিআর কাজী তানজিলুর রহমান বলেন, পেমেন্ট গেটওয়েটে একটু ঝামেলা হচ্ছে। আমাদের অনেক গ্রাহক মোটরসাইকেল অর্ডার করছে, তাদের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হচ্ছে। কারণ অনেক সময় পণ্যের সরবরাহ শেষ হয়ে যায়—যে কারণে কিছু গ্রাহক নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি পেতে সময় লাগে।
আবার রিফান্ড নিয়ে যে অভিযোগগুলো রয়েছে, তা হচ্ছে একজন যখন নির্ধারিত সময়ে পণ্য ডেলিভারি না পায় তখন সঙ্গে সঙ্গে রিফান্ড চায়। কিন্তু রিফান্ডের প্রসেসটা হচ্ছে গ্রাহক আমাদের যে প্রক্রিয়ায় টাকা দেয় আমরাও তাদের সেই প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত দিই। প্রসেসিংয়ের জন্য একটু সময় লাগে।
সূত্র—এসবি/এমএফ