সকালেরসময় বিশেষ প্রতিনিধি:: বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অর্জনে অসাধারণ সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে শনিবার (২১ জুলাই) সকাল থেকেই জনতার ঢল নামে। লাল টি-শার্ট, মাথায় সবুজ ক্যাপ, হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে উদ্যানের সবুজ চত্বর থেকে শুরু করে শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর আশপাশের এলাকায় জনতার ঢলে খেলে যাচ্ছে লাল সবুজের ঢেউ।
নির্বাচনের বছর হওয়ায় অনেকের মধ্যে নির্বাচনের আমেজ দেখা গেছে। নৌকা প্রতিকৃতি নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, নেচে-গেয়ে জনসভায় আসেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। খণ্ড খণ্ড মিছিল, ট্রাক-পিকআপ ভ্যানে চেপে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
সবুজ টি-শার্ট পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা-ছবি-শাকিল আহমেদ
বেলা ৩টা পর্যন্ত উদ্যান এলাকার বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি, দোয়েল চত্বর, মৎস্য ভবন ও শাহবাগে বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থক দেখা যায়। লাল-সবুজ পোশাকে উদ্যানের সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকা লাল সবুজময়। বেলা সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যানে পৌঁছালে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মূল মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন অস্ট্রেলিয়ায়,গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ভারতের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জনসহ উন্নয়ন ও অর্জনে অসাধারণ অবদান রাখায় শেখ হাসিনাকে গণ-সংবর্ধনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
সবুজ টি-শার্ট পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা-ছবি-শাকিল আহমেদ। সমাবেশের অন্যতম আকর্ষণ দুরন্ত শৈশব থেকে বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথ কিংবা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জীবনের নানা অধ্যায়-ইতিহাস ফুটে উঠেছে শিল্পীর রঙতুলির আঁচড়ে। শেখ হাসিনাকে ভালোবেসে এমন ১৬টি ছবি এঁকেছেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী হাশেম খানের নেতৃত্বে ১৬ জন শিল্পী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। আয়তাকার এ মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা উপস্থিত রয়েছেন। মূল মঞ্চের সামনে ছোট আরেকটা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা শুরুর পর সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। সমাবেশ প্যান্ডেলটি কয়েকটি অংশে ভাগ করা। প্যান্ডেলের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে প্রজেক্টর। মৎস্য ভবন মোড় থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের পাশের সড়ক দিয়ে শিশু পার্ক পর্যন্ত কয়েক ফিটের ব্যবধান রেখে স্থাপন করা হয়েছে অনেকগুলো তোরণ। কারওয়ান বাজারে স্থাপন করা হয়েছে মেট্রোরেলের প্রতিকৃতি।
উদ্যান এলাকার পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরনের সাজসজ্জা করা হয়েছে। জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নৌকার প্রতিকৃতি। মাদার অব হিউম্যানিটি’ ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’, অনন্য প্রধানমন্ত্রী’সহ শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশংসাসূচক বাক্য লেখা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার শোভা পাচ্ছে সড়কজুড়ে। বিভিন্ন সময় পাওয়া পুরস্কারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বাণী লেখা প্ল্যাকার্ডেরও দেখা মিলছে। তুলে ধরে হয়েছে সরকারের নানা অর্জনের কথা।
আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে টিএসসি, বাংলা একাডেমিসহ তিনটি স্টলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের লেখা বিভিন্ন বই বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। স্টলে থাকা
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢাকার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বাইরে থেকেও অনেক নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন। রাজনীতিতে আদর্শের গুরুত্ব তুলে ধরতে আমাদের এ প্রয়াস। এই বইগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে জানা যাবে।