বাংলাদেশ রেলওয়ের খালাসি পদে নিয়োগের নামে ৬৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ৮ প্রার্থীর কাছ থেকে ওই টাকা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ আবজুরুল হক, তার স্ত্রী ও অন্যান্য কর্মচারীসহ পাঁচ জন পরস্পর যোগসাজশে খালাসি পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ৮ জন প্রার্থীর কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। ঘুষ লেনদেনের ক্ষেত্রে তারা এস এ পরিবহনকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন বলে দুদক প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০২১ সালে রেলওয়ে ১০৮৬ খালাসি পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। গত বছরের ২৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফল প্রকাশের পর থেকে নানা অনিয়ম ও বির্তক দেখা দেয় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে।
কারণ হিসাবে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর খালাসি গ্রেড-২০ পদে অনলাইন আবেদন শেষ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষা হয় ২৫ নভেম্বর ২০২২ সালে। এরপর ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর খালাসি পদে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৫৫৯৯ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি খালাসি পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় ১৭৭২ জনের তালিকা দিয়ে।
প্রশ্ন হলো- বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল ১০৮৬ জনের কিন্তু চুড়ান্তভাবে ফলাফল প্রকাশ করল ১৭৭২ জনের। তবে কি বাকী ৬৮৬ জনের তালিকা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বড়রকমের দুর্নীতি বা অনিয়ম নয় কি?
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে যোগ্য প্রার্থীকে ফেল ও অযোগ্য প্রার্থীকে পাশ দেখিয়ে ১৮৫ জন সিপাহীকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর দুই চিফ কমান্ড্যান্ট ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিবসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।
ওই মামলার আসামিরা হলেন-রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ড্যান্ট/পূর্ব মো. জহিরুল ইসলাম, চিফ কমান্ড্যান্ট/পশ্চিম মোহা. আশাবুল ইসলাম, সাবেক চিফ কমান্ড্যান্ট/পূর্ব মো. ইকবাল হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব ও রেলওয়ের সাবেক কমান্ড্যান্ট ফুয়াদ হাসান পরাগ, রেলওয়ের সাবেক এসপিও/পূর্ব মো. সিরাজ উল্যাহ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহমেদ। আসামিরা সবাই নিয়োগ কমিটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
এসএস/এমএফ