

গত বছরের তুলনায় এ বছরের আগস্টে রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছিল ৪৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। তবে তা এ বছরের আগস্টে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলারে। এতে করে গত বছরের তুলনায় এ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার বা ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। তবে এ মাসে রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল তা পূরণ হয়নি।
গতকাল সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, তৈরি পোশাক, চামড়া, ওষুধ, কৃষিপণ্যসহ ২৬ ধরনের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আগস্টে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৮৭ কোটি ডলার। তবে এ মাসে রপ্তানিকারকরা ৪৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।
তথ্য থেকে জানা যায়, চলতি বছরের আগস্টের রপ্তানি গত ২০২২ সালের রপ্তানির তুলনায় বেড়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে রপ্তানি হয়েছিল ৪৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। আর তা চলতি বছরের আগস্টে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে ৪৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলারে।
৮৫ শতাংশের বেশি রপ্তানি পোশাকে
আগস্টে যে রপ্তানি হয়েছে তার ৮৫ শতাংশের বেশি এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। সব ধরনের পণ্য থেকে চলতি অর্থবছরের আগস্ট পর্যন্ত রপ্তানি এসেছে ৯৩৭ কোটি ৫১ ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি এসেছে ৭৯৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা মোট রপ্তানির ৮৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৩৫ কোটি ৫১ লাখ ডলার। এ হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে ৯ দশমিক ১২ শতাংশ।
তৈরি পোশাক বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান খাত। এ খাত থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৮৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। তবে এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৭৯৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৪৫৮ কোটি ২২ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশ। আর ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩৪১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এতেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৭ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৭ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।
অন্য কোন খাতে কত রপ্তানি
অন্যান্য খাতের মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে হিমায়িত মাছ রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ সময়ে ছয় কোটি ১০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে হয়েছিল আট কোটি ১৬ লাখ ডলার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আগের অর্থবছরের তুলনায় আয় কমেছে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের দুই মাসে রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২২ কোটি ৩২ লাখ ডলার।একইভাবে অন্যান্য সব খাত থেকেই রপ্তানি কমেছে। পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে কমেছে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে আয় কমেছে ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
তবে এই দুই মাসে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৬২ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর মধ্যে ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ (৫২ দশমিক ২৭ বিলিয়ন) ডলার তৈরি পোশাক থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে সব মিলিয়ে ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এরমধ্যে তৈরি পোশাক থেকে এসেছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
সকালের-সময়/ফোরকান