চবিতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচনা–সমালোচনার ঝড়!


নিউজ ডেস্ক  ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ৩:০১ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন। পূর্বের মনোনীত শিক্ষকদের দিয়েই গঠিত হতে যাচ্ছে এসব বোর্ড। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

আগামী ১০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড বসার কথা রয়েছে। এছাড়া মনোবিজ্ঞান বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড বসবে আগামী ১৪ নভেম্বর। বিভাগটির এই পদোন্নতি বোর্ড নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা।

যেখানে সদস্য হিসেবে আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুর মুহাম্মদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবিনা সুলতানা, রাবিতে অবাঞ্ছিত হওয়া একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম, ঢাবির দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন, চবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দ্বৈপায়ন সিকদার এবং চবির রাষ্ট্রপতি মনোনীত সিন্ডিকেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর।

পদোন্নতি বোর্ডে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়াকে চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া বোর্ডে থাকা আরেক সদস্য চবির রাষ্ট্রপতি মনোনীত সিন্ডিকেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর। যাকে নিয়ে নানা অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। তাদের দাবি সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের ঘনিষ্ঠ থাকায় নিয়োগ বাণিজ্য থেকে নানান অপকর্মে জড়িত ছিলেন তিনি। সেই সাথে তারা উপাচার্য কেন্দ্রিক একটি প্রভাব বলয়ও তৈরি করেছিলেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।

তবে মনোবিজ্ঞান বিভাগ ছাড়াও ইতিমধ্যে আরবি বিভাগ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা, উদ্ভিদবিজ্ঞান, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগসহ বেশকিছু বিভাগে পদোন্নতি বোর্ড আয়োজনের প্রক্রিয়া চলছে। পূর্বের মনোনীত শিক্ষকদের দিয়েই গঠিত হতে যাচ্ছে এসব বোর্ড। তবে এসব বোর্ডের সদস্যরা সবাই আওয়ামী পন্থি শিক্ষক হওয়ায় তাদেরকে নিয়ে বির্তক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এসব সদস্যদের ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগী’ বলে দাবি করছেন শিক্ষকরা।

জানতে চাইলে চবির নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক ঐক্যের সমন্বয়ক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান বলেন, সৎ ও যোগ্য শিক্ষকদের বাদ দিয়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে কাজ করেছে, হাসিনার গুম, খুন, দুর্নীতি ও অবৈধ কাজকে সমর্থন করেছে, জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের হত্যাকে সমর্থন করেছে, তাদের নিয়ে পদোন্নতি বোর্ড করা হলে জুলাই-আগস্টের স্পিরিট নষ্ট হবে।

তিনি আরও বলেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি ও নিয়োগ দেওয়া হোক। অন্যথায় ফ্যাসিবাদের দোসররা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যেসব বোর্ড গঠন করেছিল, তা আমাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে। পদন্নোতি বোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।

তিনি বলেন, আমি কোনো কিছু জানি না। কোনো কিছু হলে সেটার জন্য আপনি রেজিস্ট্রার, প্রক্টর বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে যান। আমি কিছু জানি না। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পদন্নোতি বোর্ড স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ে বোর্ড করা হলে শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে।

এসএস/এমএফ

আরো সংবাদ