আলোচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের (এস আলম) ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিনের নামে ৯৯ কোটি টাকা জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলে এই ব্যবস্থা নিয়েছে।
সূত্র জানায়, সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে স্থায়ী হওয়ার পর গত সাত বছর ধরে এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলো আকিজ উদ্দিনই পরিচালনা করতেন। তিনি গ্রুপের নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে প্রভাবিত করেছেন। নিজেকে গ্রুপের বিকল্প চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়োগ ও কর্মকর্তাদের পদায়নও ঠিক করে দিতেন।
বিএফআইইউ সূত্র জানায়, আকিজ উদ্দিনের নামে চারটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১০০ কোটি টাকার হদিস মিলেছে। এর মধ্যে রহমান রহমান অ্যান্ড সন্সে জমা আছে ৫৬ কোটি ২৪ লাখ, আলম ট্রেডিং অ্যান্ড বিজনেস হাউসে ৮ কোটি ২৮ লাখ, নুরুল আলম নামের একটি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৪৮ লাখ, মোস্তাক ট্রেডার্সে ১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা ও নজরুল এন্টারপ্রাইজে ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
সরকার পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে স্বল্পখ্যাত একটি কোম্পানির নামে থাকা টাকা তুলতে গেলে কর্মকর্তারা তা আটকে দেন। এরপর বিএফআইইউ খোঁজ নিয়ে আকিজ উদ্দিন–সংশ্লিষ্ট চার হিসাব অবরুদ্ধ করে দেয়।
সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এস আলম সাহেব সিঙ্গাপুরে থাকায় অনেক সময় তাঁর কর্মকর্তারা আসতেন। আমি কখনো কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দিইনি।
আকিজ উদ্দিন ১৯৯৭ সালে এসএসসি পাস করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ পান। ২০২১ সালে তিনি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এভিপি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে যোগ দেন তিনি।
ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হলেও তিনি মূলত এস আলম গ্রুপের সব ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করতেন। পাশাপাশি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে চলতেন ও সুবিধা দিতেন।
এসএস/এমএফ