আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার টাকার বাজেট পাস হয়েছে। আজ সোমবার ( ২৬ জুন) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল দশটায় সংসদের বৈঠক শুরু হয়। অধিবেশনে আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়। সংসদে পাস হওয়া এ বাজেট রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ১ জুলাই থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে কার্যকর হবে।
পাস হওয়া এ বাজেট সরকারের টানা তিন মেয়াদের ১৫ তমসহ চলতি মেয়াদের শেষ এবং বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখ’ শিরোনামে এ বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেন। সংসদ সদস্যদের দীর্ঘ আলোচনা শেষ আজ বাজেট পাস হয়। প্রতি বছর সাধারণ ২৯ বা ৩০ জুন বাজেট পাস হলেও এবার কুরবানির ঈদের কারণে কিছুটা আগে পাস হলো।
এবারের বাজেটে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাত দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক শূন্য শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে আয়ের প্রাক্কলন হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এ বাজেটের ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নেবে ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।
মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব—নতুন অর্থবছরের বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্রসহ ১০ জন সংসদ সদস্য মোট ৫০৩টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন।
এর মধ্যে কেবল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। সব প্রস্তাবই কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। অন্যান্য বছর বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হলেও এবার মাত্র দুটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ওপর আলোচনা হয়েছে।
এসএস